রামপুরে বাস আটকানোর পর রাস্তায় বসে প্রতিবাদ শুভেন্দুদের। — ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
সন্দেশখালি যেতে না পারায় এ বার আদালতে যাচ্ছেন বলে জানালেন শুভেন্দু। তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁর কাছে মেনে নিয়েছে যে, ‘উপর তলা’র নির্দেশ মেনেই তাঁদের সন্দেশখালি যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দুর দাবি, পুলিশ তাঁর কাছে আরও জানিয়েছে যে, শুভেন্দুরা কোনও ভুল করেননি। বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, সন্দেশখালি যেতে না পারায় তিনি শুক্রবারই আদালতে যাচ্ছেন। আদালতের নির্দেশ হাতে নিয়েই তিনি সন্দেশখালি যাবেন বলেও সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেছেন তিনি।
দীর্ঘক্ষণ রামপুরে রাস্তার উপরেই বসেছিলেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সন্দেশখালি যেতে দেয়নি। প্রায় দু’ঘণ্টা পর রামপুর থেকেই আবার কলকাতা ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শুভেন্দুরা। সেখানে তত ক্ষণে হাজির হওয়া তৃণমূল কর্মী, সমর্থকেরা শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে চোর স্লোগান দেন।
‘পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চ’-এর পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেত্রী দেবলীনা হেমব্রমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সন্দেশখালি যাচ্ছিল। নির্যাতিত আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতেই তাঁরা যাচ্ছিলেন। সন্দেশখালির ন্যাজাট তাঁদের আটকে দেয় ন্যাজাট থানার পুলিশ। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে গার্ডরেল ধরে টানাটানি শুরু হয়ে যায় দেবলীনাদের। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সন্দেশখালি যেতে দেয়নি।
কোচবিহারে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে তুমুল ধস্তাধস্তি। পুলিশের তৈরি প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে দেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা। তার পর পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন। বিজেপি কর্মীরা সাগরদিঘি চত্বরে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট ভেঙে তা সাগরদিঘির জলে ফেলে দেন।
কোচবিহারে পুলিশের দেওয়া প্রথম ব্যারিকেড ভাঙছেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা। — নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালির পথেই আবার আটকে দেওয়া হল শুভেন্দু অধিকারীদের বাস। বাসে শুভেন্দু ছাড়াও রয়েছেন আরও তিন বিজেপি বিধায়ক। তাঁরা বাস থেকে নেমে পথে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।
বাসন্তী রোডের উপর মালঞ্চ বাজারের কাছে আদিবাসী মহিলারা শুভেন্দু অধিকারীর বাস দেখে বিক্ষোভ দেখান। ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেন। তবে, পুলিশ তাঁদের বাসের ধারেকাছে যেতে দেয়নি। সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।
সিরিয়া পারভিন বিবি ও তথাগত ঘোষকে বৃহস্পতিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়। টাকিতে বুধবার গোলমালের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
বুধবার টাকিতে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার পর অসুস্থ হয়ে তিনি কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণে সুকান্তকে টেক্কা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু। তাই বৃহস্পতিবার তিনিও সন্দেশখালিতে অশান্তি ছড়াতে যাচ্ছেন। কুণাল বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার গাড়ির উপর উঠেছিলেন। তাঁকে টেক্কা দিতে শুভেন্দু ডবল ডেকার বাস খুঁজছেন!’’
পাশাপাশি, কুণালের কথায় উঠে আসে দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন রুখতে অমিত শাহের মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশের কর্মকাণ্ডও।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের উপর ‘হামলা’র প্রতিবাদে মেদিনীপুর শহরে এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা মিছিল করে এগিয়ে যান পুলিশ সুপারের অফিসের দিকে। ঝাঁটা হাতে নিয়ে মিছিল করতেও দেখা যায়।
ঝাঁটা হাতে প্রতিবাদে পথে নামল বিজেপি। — নিজস্ব চিত্র।
কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রীতিমতো দুর্গের চেহারা নিয়েছে সন্দেশখালি। মোতায়েন রয়েছেন বহু পুলিশকর্মী। দেওয়া হয়েছে বাঁশের ব্যারিকেড।
দুর্গে পরিণত সন্দেশখালি। — নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির এসপি অফিস অভিযানে হুগলির কামারকুন্ডুতে ঢোকার মুখে দোলুইগাছাতে ব্যারিকেড করে আটকে দিল পুলিশ। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা। তার পরেই ধর্নায় বসে পড়েন বিজেপি নেতা, কর্মীরা।
তিন দিন পুলিশি হেফাজতের পর বৃহস্পতিবার আবার আদালতে তোলা হল সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে।
বিজেপির এসপি অফিস অভিযানে ধুন্ধুমার বাঁধল বীরভূমের সিউড়িতেও। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা।
বুধবার টাকির ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য জুড়ে এসপি অফিস অভিযানের ডাক দেয় বঙ্গ বিজেপি। বর্ধমানের কার্জন গেটে কাছে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের ধুন্ধুমার বেধে যায়।
চার বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে বাস বাসন্তী হাইওয়ে ধরতেই আবার আটকায় পুলিশ। যদিও কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুভেন্দুদের বাসকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাস আবার রওনা দেয় সন্দেশখালির উদ্দেশে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ ভাবে বাসে চেপেই সন্দেশখালি যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলেন শুভেন্দুরা। কিন্তু সায়েন্স সিটির কাছে বাসন্তী হাইওয়ের উপর তাঁদের বাস আটকানো হয়। তার পর আর যেতে দেওয়া হয়নি বিজেপি বিধায়কদের। সে দিনই শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, তিনি আবার যাবেন সন্দেশখালি। বৃহস্পতিবার আবার সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা দেন। আবার সেই বাসন্তী হাইওয়েতেই আটকানো হয় তাঁদের বাস। যদিও কিছু ক্ষণের মধ্য়েই পুলিশ তাঁদের বাস ছেড়ে দেয়।
তাঁরা মাত্র চার জন বিধায়ক মিলে সন্দেশখালি যাচ্ছেন। তা-ও যদি পুলিশ আটকে দেয় তাহলে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু।
সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গায় জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। তাই আইন মেনে চার বিজেপি বিধায়ক যাচ্ছেন সন্দেশখালি। জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি, তাপসী মণ্ডল, শঙ্কর ঘোষ। বৃহস্পতিবার বিধানসভার সামনে থেকে বাসে রওনা দেন সন্দেশখালি।