‘অচেনা’ ফাইল ডাউনলোডের অভিযোগ লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তল্লাশি সেরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র আধিকারিকেরা চলে যাওয়ার পর দেখা গিয়েছে, সংস্থার কম্পিউটারে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করা হয়েছে। এমনটাই দাবি করলেন লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার কর্মী চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ওই ফাইলগুলি সংস্থার কোনও কর্মী করেননি। কী ভাবে সেই ‘অচেনা’ ফাইলগুলি ডাউনলোড করা হয়েছে, তা-ও জানেন না তাঁরা। এই নিয়ে লালবাজার (কলকাতা পুলিশের সদর দফতর)-এ অভিযোগ জানালেন চন্দন।
গত সোমবার লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থায় প্রায় ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডি সূত্রে খবর, এই সংস্থায় উচ্চ পদে কাজ করতেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ তথা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তল্লাশির পর সংস্থার কর্মী চন্দনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ইডি আধিকারিকেরা চলে যাওয়ার পর সংস্থার কম্পিউটারে ১৬টি মাইক্রোসফ্ট এক্সেল ফাইল ডাউনলোড করা হয়েছে। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, ২১ অগস্ট তল্লাশির সময় ওই কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন ইডির আধিকারিকেরা। সে সময়ই কিছু ফাইল তাঁরা ডাউনলোড করে নেন।
সোমবার সকালে ইডির তিনটি দল সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে, এমন পৃথক তিনটি জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে একটি প্রকল্প এলাকায় যান ইডির আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, লি রোডে সুজয়কৃষ্ণের মেয়ে এবং জামাইয়ের ফ্ল্যাটেও যান ইডির আধিকারিকেরা। একই সঙ্গে আলিপুরে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরেও যান তাঁরা। একযোগে তিন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। বিষ্ণুপুর এবং লি রোডে তল্লাশির কাজ শেষ হলেও আলিপুরের অফিসে তল্লাশি গড়ায় ভোর পর্যন্ত। ইডি সূত্রে খবর, এই লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থায় উচ্চ পদে চাকরি করতেন সুজয়কৃষ্ণ। আবার তাঁরই সংস্থা এসডি এন্টারপ্রাইজ়ের সঙ্গেও ওই সংস্থার লেনদেনের প্রমাণ গোয়েন্দারা পেয়েছেন বলে দাবি। ইডি চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, ২০২০-২১ সালের মধ্যে সুজয়কৃষ্ণকে এসডি এন্টারপ্রাইজ়ের সঙ্গে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের ৯৫ লক্ষ এক হাজার টাকা লেনদেন হয়েছে। কবে, কত টাকা লেনদেন, তা-ও চার্জশিটে জানিয়েছে ইডি।
তল্লাশি অভিযানের পর লিখিত বিবৃতিতে ইডির দাবি, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন অভিষেক।
যদিও ডায়মন্ড হারবারের দু’বারের সাংসদ অভিষেকের ২০১৪ বা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার সময়ে নির্বাচন কমিশনে জমা-দেওয়া হলফনামা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, তাঁর ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনও তথ্য নেই। ২০১৪ সালের হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থার ১০ টাকা মূল্যের এক হাজারটি শেয়ার রয়েছে তাঁর। ২০১৯ সালে তার কথাও নেই।