ছবিটির ব্যাপারেই কৌশানীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
একটি ছবি থেকেই বিতর্কের শুরু। ছবিটি টলিউড অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনি বসে আছেন একটি সুসজ্জিত পার্লারে। টেবিলের উপর ডান হাতটি বাড়িয়ে রেখেছেন তিনি। সেই হাতের আঙুলের নখের পরিচর্যা করছে দু’টি হাত। পাশে সাজানো নানা রঙের নেলপলিশ। নখসজ্জার সরঞ্জামও। ছবিটি তোলা হয়েছে সল্টলেট সিটি সেন্টারের একটি নেল লাউঞ্জ বা নখ পরিচর্যার পার্লারে। ঘটনাচক্রে যে পার্লারের মালিক কুন্তল ঘোষ ঘনিষ্ঠ বলে আলোচিত সোমা চক্রবর্তী। নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে ইডি জানতে পেরেছে এই সোমার অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা ঢুকেছে কুন্তলের অ্যাকাউন্ট থেকে। তবে সোমার ব্যাপারে কৌশানীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি সোমা চক্রবর্তী নামটাই শুনছি এই প্রথম। ওঁর পার্লারের হয়ে মডেলিং করার কথা তো মনেই পড়ছে না।’’
বৃহস্পতিবার ওই ছবিটির ব্যাপারেই কৌশানীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। ফোনে অভিনেত্রী বলেন, ‘‘তারকা হিসাবে অনেকেই আমার ছবি ব্যবহার করে থাকতে পারেন। তার হিসাব রাখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমার মতো অভিনেত্রীদের ছবি ব্যবহার করলে ব্যবসা ভাল হয়। সে জন্যই হয়তো ব্যবহার করেছেন! বা আমিও হয়তো শিল্পী হিসাবে যেমন অনেক পার্লার উদ্বোধন করি, সে ভাবেই এই পার্লারেরও উদ্বোধন করেছিলাম। কিন্তু কবে কোথায় গিয়েছি, তা স্মরণে রাখা সম্ভব নয়।’’
কৌশানী টলিউডের পরিচিত মুখ। আবার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন। কৃষ্ণনগরে কেন্দ্রে মুকুল রায়ের মতো দুঁদে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁকে মনোনীত করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই কৌশানী বৃহস্পতিবার নতুন করে খবরের শিরোনামে চলে আসেন নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিতর্কের সূত্রে। কারণ, কৌশানীর ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ বলে পরিচিত টলিউড অভিনেতা বনি সেনগুপ্তকে সমন পাঠিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে ইডি। বনিকে ডেকে পাঠানোর কারণ হিসাবে ইডি জানিয়েছিল, তৃণমূলের যুবনেতা কুন্তলের থেকে টাকা নিয়েছিলেন বনি। জানা যায়, বনির ‘বিশেষ বন্ধু’ কৌশানীও কুন্তল-ঘনিষ্ঠ সোমার নখ সাজানোর পার্লারের বিজ্ঞাপনে মুখ দেখিয়েছেন। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে বনির মতো কৌশানীর সঙ্গে কুন্তলের সম্পর্ক নিয়েও। জল্পনা শুরু হয়, তবে কি নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত কুন্তলের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল কৌশানীরও। বা সোমার সঙ্গেও কি তাঁর আলাপ-পরিচয় ছিল? এ ব্যাপারে সরাসরি কৌশানীর সঙ্গেই কথা বলে আনন্দবাজার অনলাইন।
জবাবে কৌশানী জানিয়েছেন, তাঁর বন্ধুরা সব সম্মাননীয় ব্যক্তি। কুন্তলের মতো মানুষ তাঁর বন্ধু হতেই পারেন না। কৌশানীর কথায়, ‘‘বনির সঙ্গে ওঁর আলাপ আছে শুনেছিলাম। আয়োজক এক সংস্থা আমাকে এক বার ওঁর অনুষ্ঠানের জন্য বলেওছিলেন। আমি তাতে যাই। এর বেশি আর কিছু জানতাম না। আর সোমা চক্রবর্তীর নামই শুনিনি। এই নিয়োগ মামলাতেই প্রথম ওঁর কথা জানতে পারলাম।’’