NRS Hospital

বিতর্ক এড়াতে লালবাজারে ‘বডি চালান’ চেয়ে চিঠি দিল এন আর এস

আর জি কর-কাণ্ডে চিকিৎসক-পড়ুয়া তরুণীর ময়না তদন্ত নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন উঠেছিল। দেহের সঙ্গে চালান ছিল কিনা, তা জানতে চেয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৬
এন আর এস হাসপাতালের তরফে লালবাজারকে লেখা সেই চিঠির প্রতিলিপি।

এন আর এস হাসপাতালের তরফে লালবাজারকে লেখা সেই চিঠির প্রতিলিপি।

আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল লালবাজারকে। তরুণীর ময়না তদন্ত করা হলেও কোনও ‘বডি চালান’ মেলেনি বলে আদালতে জানায় সিবিআই। যা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এ বার হাসপাতালে হওয়া ময়না তদন্তের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে শেষ করতে এবং জটিলতা এড়াতে লালবাজারকে চিঠি দিল এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ। হাসপাতালের ফরেন্সিক মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানের দেওয়া চিঠিতে সুষ্ঠু ভাবে ময়না তদন্ত শেষ করতে ‘বডি চালান’ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। আর জি কর হাসপাতালের তরফেও একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধানের তরফে যুগ্ম নগরপালকে (অপরাধ) একটি চিঠি পাঠানো হয়। লালবাজারের পাশাপাশি চিঠি পাঠানো হয়েছে যে সব হাসপাতালে ময়না তদন্ত হয়, তার সংশ্লিষ্ট থানাগুলিতেও। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়না তদন্তের প্রয়োজন হলে মৃত্যুর শংসাপত্র, মেডিক্যাল রিপোর্টের পাশাপাশি ‘বডি চালান’ দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট দেওয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে ভিসেরা পরীক্ষার সাহায্য নিতে হয় পুলিশকে। ভিসেরা পরীক্ষার প্রয়োজনীয় নমুনা ময়না তদন্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংগ্রহ করার কথা জানানো হয়েছে। সূর্য ডোবার পরে কোনও
কারণে ময়না তদন্তের প্রয়োজন হলে সে ক্ষেত্রেও অনুমতিপত্র দিতে বলা হয়েছে। নির্দেশ রয়েছে, সূর্যাস্তের পর ময়না তদন্ত করতে হলে তার ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। প্রসঙ্গত, আর জি কর কাণ্ডে ময়না তদন্ত সূর্যাস্তের পরে করার অভিযোগ
উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টে। কী ভাবে সূর্যাস্তের পরে হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী।

পাশাপাশি, কোনও মৃত্যুর ঘটনায় ময়না তদন্তের প্রয়োজন হলে দুপুর তিনটের মধ্যে থানার তরফে সমস্ত কাগজপত্র হাসপাতালে জমা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ১০টির বেশি ময়না তদন্ত করা হয় এন আর এস
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রতিদিন তা সুুষ্ঠু ভাবে শেষ করতে এবং জটিলতা এড়াতে
এই পদক্ষেপ বলে হাসপাতাল জানিয়েছে।

আর জি কর-কাণ্ডে চিকিৎসক-পড়ুয়া তরুণীর ময়না তদন্ত নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন উঠেছিল। দেহের সঙ্গে চালান ছিল কিনা, তা জানতে চেয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। প্রশ্নের মুখে রাজ্যের তরফের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রথমে কেস ডায়েরির সঙ্গে বডি চালান সিবিআই-কে দিয়ে দেওয়ার দাবি করেন। যদিও পরবর্তীতে সিবিআই-এর তরফ থেকে সলিসিটর জেনারেল জানান, সেই চালান তাঁরা পাননি। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় লালবাজারকে।

প্রসঙ্গত, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ময়না তদন্তের ক্ষেত্রে বডি চালানের পরিবর্তে লালবাজারের তরফে ‘রিকুইজেশন ফর্ম’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে জটিলতা এড়ানোর জন্যই এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement