Ananya Banerjee

পুর অধিবেশনে ‘যৌনগন্ধী’ গল্প বলে বিতর্কে তৃণমূলের অনন্যা, ধর্মীয় আবেগে আঘাত, দাবি বিজেপির

পুরসভার বাজেট অধিবেশনে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি গল্পের ছলে এমন কিছু বলেছেন, যা ধর্মীয় আবেগে আঘাতের সমতুল। বিজেপির সঙ্গে অনন্যার বিরোধিতা করেছেন এক তৃণমূল কাউন্সিলরও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৭
তৃণমূলের অভিনেত্রী কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের অভিনেত্রী কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

পুরসভার বাজেট অধিবেশনে নতুন বিতর্ক তৈরি করলেন তৃণমূলের অভিনেত্রী-কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেটের সমর্থনে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি একটি ‘গল্প’ শোনান। যদিও নিজে থেকেই বলে দিয়েছিলেন, সেটি গল্পই। কাউকে আঘাত করার জন্য নয়। তবে অনন্যা সেই গল্প শোনানোর পরে ধর্মীয় আবেগে আঘাত করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। যে অভিযোগের জেরে অনন্যার বক্তৃতার ওই অংশটি পুরসভার রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চেয়ারপার্সন মালা রায়। যদিও তার পরেও অনন্যার সদস্যপদ খারিজের দাবি তুলেছেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ।

Advertisement

সোমবার কলকাতা পুরসভার বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে অনন্যা গল্পের ছলে যা বলেছিলেন, তাতে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের মন্তব্য নিয়ে হইচই পড়ে যায়। শুরু হয় বিতর্ক। পশ্চিমী সংস্কৃতিতে ‘ফাদার’ এবং ‘নান’দের (সন্ন্যাসিনী) সম্পর্ক নিয়ে নানা গল্পের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এর পরে একটি গল্প শোনান। সেই ‘যৌনগন্ধী’ গল্পে বাইবেলের ১১২ নম্বর অধ্যায়ে ‘গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও’ বাণী রয়েছে বলেও জানান। সেই সময়েই প্রতিবাদ ওঠে বিজেপির তরফে। সজল ছাড়াও প্রতিবাদ করেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা। বস্তুত, ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুস্মিতা ভট্টাচার্যের সঙ্গেও অনন্যার বাদানুবাদ হয়। সুস্মিতা বলেন, ‘‘ফাদার-নানের সম্পর্কে ‘সেক্স’ শব্দটি উচ্চারণ করে অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করেছেন অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ প্রসঙ্গত, সুস্মিতা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।

অনন্যার সঙ্গে পরে যোগাযোগ করা হলে তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমি একটা রূপকধর্মী গল্প বলে শুরু করেছিলাম। যে শব্দ নিয়ে বিরোধিতা করা হচ্ছে, সেই ‘সেক্স’ তো এখন পাঠ্যক্রমের অঙ্গ। হিন্দিবলয়ের প্রেরণা নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের কাছে এটা সমস্যা বলে মনে হয়েছে। কারণ, এক জন মহিলা এমন খোলামেলা আলোচনা করছেন। নারীবিদ্বেষী মনোভাব থেকেই এই বিরোধিতা।’’ জবাবে সজল বলেন, ‘‘উনি যে যুক্তিই দিন, আসলে তিনি সংখ্যালঘুদের অপমান করেছেন। আমাদের মেয়রও (ফিরহাদ হাকিম) এক জন সংখ্যালঘু। সেখানে এই অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। বাইবেলের অপমান করছেন ভুল উদাহরণ দিয়ে। ওই বক্তব্য রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কি না জানি না। তবে ওঁর সদস্যপদ খারিজ করা উচিত।’’

অনন্যা বলেন, ‘‘এ বার যে হেতু ১১২ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট, তাই বাইবেলের ১১২ নম্বর অধ্যায়ের কথা বলেছি।’’ দলীয় কাউন্সিলর সুস্মিতার বক্তব্য প্রসঙ্গে অনন্যা বলেছেন, ‘‘আমি জানি না, ভট্টাচার্য খ্রিস্টান হয় কি না। ইংরেজিতে কথা বলতে এসেছিলেন। ওঁর কেন সমস্যা হল আমি জানি না। উনি বাংলাটা মনে হয় ভাল বোঝেন না!’’ তাঁর ওই বক্তব্য পুরসভার অধিবেশনের রেকর্ড থেকে বাদ যাওয়ার বিষয়ে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বলেন, ‘‘রেকর্ড থেকে বাদ দিলেও আমার কিছু যায়-আসে না। মহিলারা যৌনতার কথা বললেই আসলে সমস্যা তৈরি হয়! আমি আগামী দিনেও প্রয়োজনে এ কথা বলব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement