(বাঁ দিক থেকে )অসীম বসু, মালা রায়, সজল ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
শো-কজ়ের জবাব সন্তোষজনক না হলে শাস্তির সম্মুখীন হতে পারেন তৃণমূল এবং বিজেপির কাউন্সিলর। এমনই ইঙ্গিত দিলেন কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। শনিবার এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার কলকাতা পুরসভায় এসে শো-কজ়ের জবাব দিয়ে যান ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ এবং ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। দুই কাউন্সিলর জবাব দিলেও, এখনও তা দেখার সুযোগ হয়নি চেয়ারপার্সনের। শুক্রবার রাতেই দিল্লি থেকে সংসদের অধিবেশনে যোগ দিয়ে কলকাতায় ফিরেছেন দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ। তবে নিজের অফিস মারফত জেনেছেন দুই কাউন্সিলরই জবাব জমা দিয়েছেন তাঁর দফতরে। মালা বলেছেন, “সব কিছুই করা হবে কলকাতা পুরসভার আইন মেনে। আগে ওই দুই কাউন্সিলর কী জবাব দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাঁদের জবাব যদি সন্তোষজনক না হয়, সে ক্ষেত্রে আলোচনা সাপেক্ষে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে।” তবে নিজেদের কাজের জন্য যদি তাঁরা অনুতাপ প্রকাশ করে চেয়ারপার্সনের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন, তা হলে তাঁদের শাস্তির মুখে না-ও পড়তে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মালা। তবে পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা না চাইলে এ ক্ষেত্রে শাস্তির মুখে পড়তে পারেন সজল এবং অসীম। কারণ, যে ঘটনার জন্যে তাঁদের শো-কজ় করা হয়েছে তা কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে নজিরবিহীন। তাই এখন কাউন্সিলরদের ভাগ্য নির্ধারণ করছে তাঁদের উত্তর উপর।
উল্লেখ্য, গত শনিবার পুর অধিবেশন চলাকালীন মারামারির ঘটনা ঘটে বিজেপি এবং তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে। বিজেপি কাউন্সিলর সজল অভিযোগ করেন, তাঁকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম। সঙ্গে তাঁর বাবা প্রবীণ রাজনীতিক প্রদীপ ঘোষকে গালিগালাজ করা হয়েছে। পাল্টা তৃণমূল কাউন্সিলর অসীমের অভিযোগ, বিজেপি কাউন্সিলর সজল তাঁদের দলকে চোর বলে সম্বোধন করেছেন। যা অত্যন্ত আপত্তিজনক এবং অসম্মানজনকও বটে। মারামারির ঘটনার জেরে শনিবারেই দুই কাউন্সিলরকে শো-কজ় করেন চেয়ারপার্সন মালা। জানিয়ে দেন সাত দিনের মধ্যে শো-কজ়ের জবাব দিতে হবে। শুক্রবার সেই সময়সীমার শেষ দিন ছিল, আর সে দিনই দুই কাউন্সিলর কলকাতা পুরসভায় এসে চেয়ারপার্সনের দফতরে নিজেদের জবাব জমা দিয়েছেন।
শো-কজ়ের উত্তর দেওয়ার পর তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বলেছেন, “আমি সজলকে মারিনি, আমি ওকে শুধুমাত্র সরিয়ে দিয়েছিলাম। উত্তেজনার বসে ওই ঘটনা ঘটেছিল।” আর বিজেপি কাউন্সিলর সজলের বক্তব্য, “আমি কোনও অন্যায় করিনি, আমার বাবাকে গালি দেওয়ার পরেই চোর বলেছিলাম, যেটা অসংসদীয় শব্দ হতে পারে, আমার অজান্তে এই ঘটনা পুরসভার মর্যাদাহানি করে থাকলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।” পুর অধিবেশনে বিজেপি কাউন্সিলরের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় শুক্রবার চেয়ারপার্সনের দফতরে ডেপুটেশন জমা দিয়েছেন বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরা।