গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
দু’দিনের মধ্যেই কাটল সন্দীপ ঘোষের সিবিআই স্বস্তি। ৪৮ ঘণ্টার বিরতির পরে আবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে এলেন তিনি। এই নিয়ে গত ১৮ দিনে ১৬ বার সিবিআইয়ের মুখোমুখি হলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ।
আরজি কর নিয়ে আন্দোলনে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ এখনও টাটকা। এখনও আন্দোলনকারীরা প্রশ্ন তুলছেন, সন্দীপ কত বড় ক্ষমতাবান ব্যক্তি, যে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? সরকারের কাছে এ প্রশ্নের জবাবও চাওয়া হচ্ছে, আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরও কেন সন্দীপকে বরখাস্ত করা হয়নি! সেই সব বিতর্কের মধ্যেই হঠাৎ সিবিআই দফতরে সন্দীপের নিয়মিত হাজিরা বন্ধ হয়েছিল। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল জেরা কি সমাপ্ত হল! সোমবার তিনি আবার হাজির হলেন সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে।
গত ১৬ অগস্ট থেকে ৩০ অগস্ট ১৫ দিনে সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৪ বার ডেকে পাঠানো হয়েছে সিবিআই দফতরে। যে একদিন তিনি যাননি। সে দিন সিবিআই এসেছিল তাঁর বাড়িতে। সেখানে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় সন্দীপকে। বাকি দিনগুলিতে তিনি প্রতি দিনই সকালে সিজিওতে হাজিরা দিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদ সামলে বাড়ি ফিরতেন রাতে। কিন্তু গত শনি এবং রবিবার সেই নিয়মের ব্যত্যয় হয়। তার পরে আবার সোমবার তাঁকে ডেকে পাঠাল সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সন্দীপের পলিগ্রাফ টেস্ট হয়েছে। সেই পলিগ্রাফ টেস্ট থেকে উঠে আসা তথ্য সম্পর্কেই তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই। সেই সূত্রেই সিজিওতে ডেকে পাঠানো হয়েছে সন্দীপকে।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্তভার হাতে পাওয়ার পর থেকেই সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে ছিলেন সন্দীপ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে গত ১৪ অগস্ট আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব হাতে নেয় সিবিআই। তার পরেই সন্দীপকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। রক্ষাকবচ পেতে হাই কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন সন্দীপ। তবে আদালত তাঁকে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ১৬ অগস্ট দুপুরে সিবিআইয়ের গাড়িতে চেপে তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে প্রথম যেতে দেখা যায়। তার পর থেকে প্রতি দিনই সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে গিয়েছেন সন্দীপ। তবে এখনও পর্যন্ত মাত্র এক বারই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছিলেন তিনি। ১৭ অগস্ট সিবিআই দফতরে প্রবেশ করার মুখে তিনি জানান, তদন্তে সব রকম সাহায্য করবেন। তার পর থেকে প্রতি দিনই তাঁকে সাংবাদিকেরা বহু প্রশ্ন করেছেন। সব প্রশ্নের প্রেক্ষিতে সন্দীপ ছিলেন নীরব!