দাবি: নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ২০১৬ এসএলএসটি-র শিক্ষক-শিক্ষিকারা যোগ্যদের প্যানেল চেয়ে অবস্থান করছেন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
অযোগ্যদের বাদ দিয়ে দ্রুত যোগ্য শিক্ষকদের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে। এই দাবিতে ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ (২০১৬)'-এর তরফ থেকে মিছিলের পরে রাতভর অবস্থান চলল ওয়াই চ্যানেলে। শুক্রবার দুপুরে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যায় মিছিল। প্রথমে ডোরিনা ক্রসিংয়ে বসে পড়েন শিক্ষকেরা। পরে তাঁরা উঠে যান রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে।
রাতে পুলিশ এসে তাঁদের উঠে যেতে বললে শিক্ষকেরা জানান, অনেকেই দূরের জেলা থেকে এসেছেন। তাঁদের পক্ষে এখন বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়। রাতটা সেখানেই কাটাতে হবে। তখন পুলিশকর্তারা তাঁদের ওয়াই চ্যানেলে গিয়ে বসতে বলেন। পুলিশের অনুমতিতে এবং নিরাপত্তার মধ্যেই শিক্ষকেরা সেখানে বসে থাকেন।
২০১৬ সালে এসএলএসটি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন ওই শিক্ষকেরা। গত এপ্রিল মাসে হাই কোর্ট ২৬ হাজার প্রার্থীর পুরো প্যানেলই বাতিল করে দেয়। বর্তমানে বিষয়টি বিচারাধীন। এ দিন দুপুরে এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে মিছিলে হাঁটছিলেন পূর্ব বর্ধমান থেকে আসা কয়েক জন শিক্ষক। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘প্যানেলে কয়েক জন অযোগ্য থাকার জন্য কেন পুরো প্যানেল বাতিল হবে?’’ মঞ্চের নেতৃস্থানীয় শিক্ষক মেহবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘যোগ্য-অযোগ্যের পার্থক্য করতে এস এস সি যদি অপারগ হয়, তার দায় আমাদের নয়। সিবিআই তো অযোগ্যদের তালিকা দিয়েছে। প্রয়োজনে আদালতের হস্তক্ষেপে কমিশন গঠন করে যোগ্য-অযোগ্যের বিচার হোক।’’
এ দিন রাস্তায় দাঁড়িয়েই শিক্ষকেরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমাদের দাবি যোগ্য-অযোগ্যর বিভাজন’। কয়েক জন শিক্ষক জানান, যোগ্য-অযোগ্যের তফাত করা যাচ্ছে না বলে তাঁরা সামাজিক হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। কর্মক্ষেত্রেও বঞ্চিত হচ্ছেন নানা সুবিধা থেকে। যেমন, ঋণ নিতে চাইলে অনেককে পরিষ্কার বলে দেওয়া হচ্ছে, ঋণ দেওয়া হবে না। কারণ, তাঁদের চাকরি নিশ্চিত নয়। এমনকি, কয়েক জন ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’ পাননি বলে অভিযোগ। বিশেষ কারণে বদলির দরকার হলে সেই সুযোগও মিলছে না। বীরভূমের কয়েক জন শিক্ষক জানান, অভিভাবকদের কেউ কেউ সরাসরি তাঁদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। মেহবুব বলেন, ‘‘আমাদের মামলা লড়ার জন্য এস এস সি, সরকার বা শিক্ষা দফতরকে দক্ষ আইনিজীবী নিয়োগ করতে হবে। আশ্বাস না পেলে আমরা উঠব না। মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপেরও দাবি করছি আমরা।’’
যোগ্যদের তালিকা কবে প্রকাশ হবে? স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি বিচারাধীন। এই নিয়ে তারা মন্তব্য করবে না।