বিকাশ ভবনের পিছনের গেটে প্রতীকী তালা ঝোলালেন চাকরিপ্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার, সল্টলেকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
দ্রুত ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার দাবিতে নতুন বছরের প্রথমেই ফের পথে নামার ডাক দিয়েছিলেন ২০২২ প্রাথমিক টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার তাঁদের সেই বিকাশ ভবন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল সল্টলেকের করুণাময়ীতে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি চলল চাকরিপ্রার্থীদের। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে আটক করার সময়ে কার্যত টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে বিকাশ ভবনের পিছনের গেটে প্রতীকী তালা ঝুলিয়ে দেন চাকরিপ্রার্থীরা। কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে আটক করে বিধাননগরের বিভিন্ন থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
২০২২ টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীদের এ দিনের বিকাশ ভবন অভিযান ছিল পূর্ব নির্ধারিত। সেই
মতো বেলা ১২টার আগে থেকেই প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল বিকাশ ভবনের সামনে।
কিন্তু, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে চাকরিপ্রার্থীরা একসঙ্গে না এসে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে আসেন। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এক দল বাসে করে এসে বিকাশ ভবনের সামনে নামেন। আর এক দল মেট্রোয় এসে বিকাশ ভবন লাগোয়া সেন্ট্রাল পার্ক স্টেশনে নামেন। তৃতীয় দলটি সিটি সেন্টার থেকে একটু ঘুরপথে চলে আসে বিকাশ ভবনের পিছনের গেটে। এ ভাবে চাকরিপ্রার্থীরা তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে আসায় প্রাথমিক ভাবে পুলিশ কিছুটা হকচকিয়ে যায়। তারা আন্দোলনকারীদের আটকানোর আগেই এক দল চাকরিপ্রার্থী বিকাশ ভবনের পিছনের গেটে এসে তাঁদের সঙ্গে থাকা একটি কার্ড বোর্ড দিয়ে প্রতীকী তালা ঝুলিয়ে দেন।
মোহিত করাতি নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘২০২২ টেটের নিয়োগ করো, নয় তো
শিক্ষা দফতর বন্ধ করো— এই স্লোগান তুলে আমরা বিকাশ ভবনের দক্ষিণ গেটে প্রতীকী শিকল-তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। ২০১৭ সালের টেট হয়েছে ২০২১ সালে। সেই নিয়োগের পরে আর কোনও নিয়োগ নেই। ২০২২ সালের টেটের ইন্টারভিউ নিয়ে কবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে, তার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে আছেন কয়েক হাজার প্রার্থী।’’
বিদেশ গাজি নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘আদালত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করার অনুমতি দেয়। অথচ, প্রশাসন অনুমতি দিতে চায় না। আন্দোলন আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। কেন বার বার চাকরিপ্রার্থীদের অর্থব্যয় করে আদালতে গিয়ে অনুমতি নিতে হবে? নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হলে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’
এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন কোচবিহার থেকে আসা এক চাকরিপ্রার্থী সাধন দাস।
তিনি বলেন, ‘‘২০২৪ সালের শুরুতে আশা জেগেছিল, হয়তো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু বছরের শেষে এসে দেখি, সেই আশায় জল পড়ল। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল কিন্তু বলেছিলেন, বছরে দু’বার নিয়োগ হবে। টেট পাশ কেউ বসে থাকবেন না।’’
যদিও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘কিছু আইনি জটিলতা আছে। আমরা শূন্য পদ চেয়ে শিক্ষা দফতরকে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’