শান্তি নস্কর।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত এক বৃদ্ধাকে তাঁর পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দিল পুলিশ। রবিবার সকালে, সোনারপুরের ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চতুর্থীর দিন এক রিকশাচালক ওই বৃদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে সোনারপুর থানায় যান। রিকশাচালক জানান, হরিনাভি এলাকা থেকে বৃদ্ধা তাঁর রিকশায় উঠলেও কোথায় যাবেন তা বলতে পারছেন না। এ দিকে তাঁর সঙ্গে দু’টি বড় ব্যাগ রয়েছে।
এর পরে সোনারপুর থানার আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী প্রায় ঘণ্টাখানেক ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলেন। দেখা যায়, বৃদ্ধা নিজের ছেলেমেয়ের নাম বলতে পারছেন। সোনারপুরে একাধিক আত্মীয় রয়েছেন, সেটাও বলতে পারছেন। কিন্তু নিজের বাড়ির ঠিকানা মনে করতে পারছেন না। তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ তন্নতন্ন করে খুঁজেও ঠিকানা জানতে পারেনি পুলিশ। এর পরে তাঁকে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার একটি হোমে রাখার ব্যবস্থা হয়। পাশাপাশি কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও হ্যাম রেডিয়োকে ওই বৃদ্ধার ছবি দিয়ে তাঁর ঠিকানা খোঁজার অনুরোধ করা হয়।
সোনারপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, তার পর থেকে প্রতিদিন সকালে স্নান করে ব্যাগ গুছিয়ে ছেলেমেয়ের অপেক্ষায় বসে থাকতেন ওই বৃদ্ধা। অষ্টমীর দিন কথা বলতে বলতে হঠাৎই ওই বৃদ্ধা আইসি সঞ্জীববাবুকে বলেন, ‘‘আমাদের আমতলায় পুজোর সময়ে খুব জমজমাট ভিড় হয়।’’ এ কথা শুনেই হ্যাম রেডিয়োর অন্যতম সদস্য অম্বরীশ নাগ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
অম্বরীশবাবু আমতলা এলাকার হ্যাম রেডিয়ো সদস্যদের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। পাশাপাশি সোনারপুর থানার তরফে বিষ্ণুপুর থানাকেও
খোঁজখবর নিতে বলা হয়। অবশেষে একাদশীর দিন আমতলায় ওই বৃদ্ধার বাড়ির খোঁজ মেলে। তাঁর ছেলে রঞ্জন নস্করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। রবিবার সকালে মা শান্তি নস্করকে নিয়ে যেতে সোনারপুর থানায় আসেন ছেলে রঞ্জন। তিনি বলেন, ‘‘সোনারপুরে আমাদের অনেক আত্মীয় রয়েছেন। চতুর্থীর দিন ব্যাগ নিয়ে সোনারপুরে যাচ্ছি বলে মা বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা জানতাম, তিনি সোনারপুরের আত্মীয়দের কাছেই আছেন। কিন্তু
পরে হ্যাম রেডিয়োর থেকে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশও যোগাযোগ করে।’’
বাড়ি ফেরার আগে থানার আইসির ঘরে বসে পুলিশকর্মীদের শান্তিদেবী বলে গেলেন, ‘‘পুজোর সময়টা তোমাদের সঙ্গে ভালই কাটল। আজ বাড়ি যাই। আবার এক দিন আসব। এর পরে ছেলেকে সঙ্গে করে নিয়ে আসব।’’