সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
তিনি এখন মুম্বইয়ে। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে ভারাক্রান্ত। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বরাবরই সুসম্পর্ক থেকেছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। যদিও বহু বছর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল না। বৃহস্পতিবার মুম্বইয়ে অবতরণের পরেই বুদ্ধদেবের প্রয়াণের খবর পেয়েছেন সৌরভ। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁকে শোকাচ্ছন্ন শোনাল।
সৌরভের কথায়, ‘‘আমার সঙ্গে খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল। পুরোপুরি খেলাপাগল মানুষ ছিলেন। আমি তখন ভারতের অধিনায়ক। আমার সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে বিস্তর আলোচনা হত। আমি ছ’বছর ক্যাপ্টেন ছিলাম। যত বারই কথা হয়েছে, ক্রিকেট নিয়েই হয়েছে। শুধু সৌরভের ক্রিকেট বা সমকালীন ভারতীয় ক্রিকেট নয়, পঙ্কজ রায়ের ব্যাটিং নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’’ পাশাপাশিই সৌরভ জানাচ্ছেন, এত বার কথা হলেও রাজনীতি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও দিন কোনও আলোচনা করেননি বুদ্ধদেব। তাঁর কথায়, ‘‘এত বার কথা হলেও কোনও দিন রাজনৈতিক ভাবে কিছু করতে বলেননি। রাজনীতি নিয়ে একটি কথাও বলেননি। এতটাই উদারতা ছিল ওঁর মধ্যে।’’
বস্তুত, বুদ্ধদেবকে খেলার সঙ্গে সঙ্গে সিনেমাপাগল বলেও মনে হয়েছে সৌরভের। তাঁর কথায়, ‘‘সিনেমা নিয়েও ওঁর অসম্ভব আগ্রহ ছিল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল।’’ বুদ্ধদেবের সঙ্গে সৌরভের শেষ বার দেখা বা কথা হয়েছে ২০০৮-’০৯ সাল নাগাদ। তার পরে আর দেখা বা কথাবার্তা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘ভোটে হেরে যাওয়ার পরে উনি নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছিলেন। তার আগে থেকেই যোগাযোগটা একটু কমে এসেছিল। আমার সঙ্গে শেষ বার দেখা বা কথা হয়েছে সম্ভবত ২০০৮-’০৯ সালে।’’ মানুষ বুদ্ধদেবের প্রতি তাঁর অবিমিশ্র শ্রদ্ধা ছিল বলে জানাচ্ছেন সৌরভ। পাশাপাশিই প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারকে সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গে বামশাসনের অবসানের পরে সৌরভকে নিয়ে রাজনীতির জল্পনা জারি থেকেছে। এমনকি, গত বিধানসভা ভোটের সময়েও সেই জল্পনা তৈরি হয়েছিল। বুদ্ধদেব ছাড়াও তাঁর মন্ত্রিসভার তৎকালীন সদস্য তথা পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও সৌরভের অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল। সৌরভ লর্ডসে শতরান করে ফেরার পরে কলকাতা পুরসভার তরফে সৌরভকে নাগরিক সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল। এ কথা মোটামুটি সর্বজনবিদিত যে, বুদ্ধদেব নিজেও একটা সময়ে উত্তর কলকাতার দেশবন্ধু পার্কে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নিতেন। তবে চোখ খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে তাঁকে অকালে ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দিতে হয়েছিল। কিন্তু ক্রিকেট সম্পর্কে তাঁর উৎসাহে কখনও ঘাটতি পড়েনি। সৌরভের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ছিল সম্পূর্ণ ক্রিকেটীয়।