RG Kar Medical College

তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যু: ধর্না, কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা, তদন্তে গেলেন স্বয়ং পুলিশ কমিশনার

ছাত্রীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বিচার বিভাগীয় তদন্ত-সহ একাধিক দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৩৮
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (বাঁ দিকে)। সেমিনার হলের সামনে বিক্ষোভ (ডান দিকে)।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (বাঁ দিকে)। সেমিনার হলের সামনে বিক্ষোভ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

তরুণী চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে উত্তাল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ। মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। সদস্যেরা জানিয়েছেন, বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্ত-সহ তাঁদের বাকি দাবি যত ক্ষণ পর্যন্ত মানা হবে না, তত ক্ষণ বন্ধ থাকবে কাজ। শুধু হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে। হাসপাতালের ভিতরে বিক্ষোভ দেখায় চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন। তারা ময়নাতদন্তের জন্য চিকিৎসকের দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত তাঁর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্য হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ারাও আরজি করে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন। হাসপাতালের সুপার ‘সত্য প্রকাশ্যে’ আনার দাবি তুলেছেন। ঘটনার তদন্তে গিয়েছেন খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। হাসপাতালে পৌঁছেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি এবং বাম সংগঠন এআইডিএসও। হাসপাতালের ঘরে-বাইরে এই বিক্ষোভের জেরে বিঘ্নিত চিকিৎসা পরিষেবা। বিপাকে পড়েছেন বহু রোগী এবং তাঁদের পরিবার।

Advertisement

শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের চার তলার সেমিনার হল থেকে এক তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। হাসপাতালের ভিতরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তার এবং চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যেরা। চার তলার যে সেমিনার হলে চিকিৎসকের দেহ রাখা রয়েছে, সেখানে জড়ো হন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষও সেখানে উপস্থিত হন। তবে তরুণীর মৃত্যুকে ঘিরে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করতে চাননি। হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ বলেন, ‘‘পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্ত হবে। চিকিৎসকের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। সেই ময়নাতদন্ত করার ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে। আমরাও চাই, সত্য প্রকাশ্যে আসুক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ রয়েছে, ফরেন্সিক দল রয়েছে। তদন্ত চলছে। মন্তব্য করা যাবে না। তদন্ত চলছে।’’

অন্য দিকে, ছাত্রীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত-সহ একাধিক দাবি জানিয়েছেন। এ-ও বলেছেন, যত ক্ষণ কমিটি তৈরি এবং অন্য দাবি না মিটছে, তত ক্ষণ কর্মবিরতি চলবে রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনের সদস্য আরিফ আহমেদ লস্কর জানিয়েছেন, চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তদন্ত করাতে হবে। ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত থাকবেন পাঁচ জন জুনিয়র মহিলা চিকিৎসক, পরিবারের সদস্য, বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করাতে হবে। আরজি করেই ময়নাতদন্ত করাতে হবে। এখনই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তদন্ত কমিটি তৈরি করতে হবে। এই দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। তবে ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে মন্তব্য করেননি আরিফ। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনাটি সেমিনার রুমে হয়েছে যা সন্দেহজনক। তবে মন্তব্য করব না। তদন্ত চলছে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন