Sandip Ghosh

সন্দীপ ঘোষের বাড়ির বেআইনি অংশ ফের পরিদর্শন করুন, চিঠি মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে

সন্দীপ ঘোষের বাড়ি উত্তর কলকাতার বেলেঘাটার বদন রায় লেনে। চারতলা এই বাড়ির কিছু অংশ বেআইনি ভাবে নির্মিত বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:২০
Re-inspect illegal portion of Sandeep Ghosh\\\\\\\\\\\\\\\'s house, a request letter sent to Mayor Firhad Hakim

(বাঁ দিক থেকে) সন্দীপ ঘোষ, প্রাক্তন অধ্যক্ষের সেই বাড়ি, ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল ছবি।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়ির বেআইনি নির্মাণ নিয়ে ফের সরব হয়েছেন এক অভিযোগকারী। নিজের পুরনো অভিযোগের কথা স্মরণ করিয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি দিয়েছেন। সঙ্গে তাঁর বাড়ির অবৈধ অংশটি ফের পরিদর্শনের দাবি জানানো হয়েছে। তবে পুরসভা এই বিষয়ে কোনও নতুন পদক্ষেপ করবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

Advertisement

সন্দীপের বাড়ি উত্তর কলকাতার বেলেঘাটার বদন রায় লেনে। চারতলা এই বাড়ির কিছু অংশ বেআইনি ভাবে নির্মিত বলে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। অভিযোগকারী দাবি করেছিলেন, নির্মাণটি পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই হয়েছে। এই অভিযোগ প্রথম ওঠে যখন আরজি কর হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা দেশ জুড়ে তোলপাড় ফেলেছিল। সেই সময় সন্দীপ ওই হাসপাতালের অধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে জনতার মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এই আবহেই পুরসভার কাছে বেআইনি নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুরসভা সন্দীপের বাড়িতে একটি নোটিস পাঠায়। নোটিসে জানানো হয়, পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার জীবন দাস এবং কিরণ মণ্ডল ৩০ সেপ্টেম্বর বাড়িটি পরিদর্শন করবেন। পরিদর্শন করা হলেও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে পুরসভার তরফে আর কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি।

সম্প্রতি সন্দীপ জেলবন্দি থাকার মধ্যেই অভিযোগকারী ফের মেয়রকে চিঠি দিয়ে বাড়িটির বেআইনি অংশ পরিদর্শনের দাবি তোলেন। চিঠিতে অভিযোগকারীর বক্তব্য, আগের পরিদর্শনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি এবং বেআইনি নির্মাণের বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা প্রথম বার পরিদর্শনের সময় অনেক তথ্য সংগ্রহ করেননি। তাই আবার পরিদর্শন করে নতুন তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নিক পুরসভা, এমনটাই দাবি করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে বাড়িটি নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না তারা। যে হেতু সন্দীপ আদালতে বিচারাধীন, তাই আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করছে পুরসভার একাংশ।

সন্দীপের বাড়ির বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে হলে প্রথমে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। সন্দীপ বর্তমানে জেলবন্দি থাকায় বিষয়টি আরও জটিল। কলকাতা পুরসভার আইন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং বেআইনি নির্মাণের বিষয়টি একসঙ্গে জুড়ে যাওয়ায় জনমানসে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সন্দীপের বাড়ি পরিদর্শনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে না-আসায় অভিযোগকারীর বক্তব্য সমর্থন পাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। অভিযোগকারীর সাম্প্রতিক চিঠি এবং পুরসভার নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলের কাউন্সিলরেরা। তবে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে পুরসভার পক্ষে দ্রুত পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে কি না, তা ভবিষ্যৎই বলবে।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় তথ্য লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিবিআই নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে, সন্দীপের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির আর একটি মামলা চলছে। সেই মামলায় সিবিআই চার্জশিট জমা দিয়েছে। ফলে জামিন পেলেও, আর্থিক দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন থাকায় সন্দীপ এখনও জেল থেকে মুক্তি পাননি।

Advertisement
আরও পড়ুন