চালক ও বাসকর্মীদের মধ্যে ট্র্যাফিক আইনের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল আদর্শ বিধিতে। —প্রতীকী চিত্র।
বাসের রেষারেষি বন্ধ করতে চালক ও বাসকর্মীদের মধ্যে ট্র্যাফিক আইনের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল আদর্শ বিধিতে। সেই মতো বাসচালকদের সাম্প্রতিক একাধিক দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে অবহিত করতে কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ একাধিক বাস সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। রেঞ্জার্স ক্লাবে আয়োজিত কর্মসূচিতে একাধিক দুর্ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখিয়ে বাসচালকদের নানা ভুল-ত্রুটি, অন্য সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
শহরে পথ দুর্ঘটনার গত বছরের পরিসংখ্যান দিয়ে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়, ওই সমস্ত দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই কোনও না কোনও বাস জড়িত। বেপরোয়া গতিতে বাস চালানো বন্ধ করার পাশাপাশি চালকেরা সচেতন হলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব বলে জানান পুলিশের আধিকারিকেরা। এই কর্মসূচিতে কলকাতা পুলিশের উপ-নগরপাল (ট্র্যাফিক) শ্রীকান্ত জগন্নাথ রাও ছিলেন। দিনকয়েক আগে উল্টোডাঙার তেলেঙ্গাবাগানে দু’টি বাসের রেষারেষিতে গুরুতর আহত হন এক মহিলা। বাসের যাত্রীরাও কী ভাবে বিপদে পড়েন, তা-ও এ দিন বাসমালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের দেখানো হয়। চালকেরা বাস স্টপে থামা ছাড়াও কী ভাবে নির্দিষ্ট লেন অনুসরণ করে বাস চালালে দুর্ঘটনা এড়াতে পারবেন, তা-ও এ দিন তাঁদের সামনে তুলে ধরা হয়। বাসমালিক সংগঠনগুলির তরফে এ দিন ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ট্র্যাফিক পুলিশের জরিমানা এবং নানাবিধ কারণে চালকদের মধ্যে ভীতি কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে জরিমানা এবং সাজা এড়াতে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা জরুরি।’’
পরে এ নিয়ে শ্রীকান্ত জগন্নাথ রাও বলেন, “মামলা রুজু করে সরকারের রাজস্ব বাড়ানোই আমাদের উদ্দেশ্য নয়, সুরক্ষাই মূল লক্ষ্য।” উপ-নগরপাল (ট্র্যাফিক) আরও বলেন, “অনেকেই মনে করেন, কলকাতা পুলিশ মামলা রুজু করে সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর জন্য। কিন্তু, তা নয়। রাজস্ব আদায় করার লক্ষ্য আমাদের নেই। সুরক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় বাসচালক এবং কর্মীদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করার উপরে জোর দেন। যাতে আঞ্চলিক ওই সব শিবিরে গিয়ে চালকেরা সরাসরি ট্র্যাফিক-বিধি সম্পর্কে জানতে পারেন। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা এ দিন বলেন, ‘‘বিভিন্ন ট্র্যাফিক সিগন্যালে টাইমার থাকা জরুরি। যাতে সিগন্যাল বদলের সময় আঁচ করার ক্ষেত্রে চালকদের ভুল-ত্রুটি কমানো যায়। ওই ব্যবস্থা সর্বত্র ঠিক মতো কাজ করলে জরিমানা করার ঘটনা কমে আসা ছাড়াও দুর্ঘটনা কমবে বলে জানান তিনি।’’