সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। সংগৃহীত ছবি।
মঙ্গলবারই তিব্বত-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা কেঁপে উঠেছিল ভূমিকম্পে। সরকারি পরিসংখ্যানে এখনও অবধি মৃত্যু হয়েছে ১২৬ জনের। আহতের সংখ্যা আরও বেশি। এই আবহেই বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে অভিনব একটি কোর্স চালু করল নিউটাউনের সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। জাপানের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে প্রথম বার এই পাঠক্রমটি পড়ানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
চলতি বছরে জাপানের কিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক মারিয়ো মার্টিন লুইজ় বলেন, “চুক্তি স্বাক্ষরের সময় স্থির করা হয় দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এ বার সেই মউ-এর অধীনে প্রথম ধাপে চালু করা হল এই পাঠক্রম।”
মারিয়ো জানান, কোর্স আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব গবেষণা কেন্দ্র এবং কিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডিয়া জাপান ল্যাবরেটরি। সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে কোর্সের ক্লাস। অনলাইন কোর্সটি চলবে দু’মাসব্যাপী। পাঠক্রমটিতে ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। পাঠক্রমটি করবেন জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দলে বা বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে কর্মরতরা। ক্লাস নেবেন দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ শিক্ষকরা।
কিন্তু হঠাৎ এই বিষয়ে কোর্স চালুর ভাবনা কেন? মারিয়োর কথায়, “আসলে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বর্তমানে দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি কিছু দুর্যোগ ‘ম্যান মেড’ বা মনুষ্যসৃষ্ট। এ সব বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে জাপানের অভিজ্ঞতা বেশি। তাই যাতে এ ক্ষেত্রে দেশে জাতীয় বা রাজ্যস্তরে কর্মরতরা আরও ভাল ভাবে প্রশিক্ষিত হতে পারেন এবং তাতে বৃহত্তর সমাজ লাভবান হন, সেই উদ্দেশ্যেই চালু হচ্ছে এই কোর্স।”
এ ছাড়া, আরও একটি কারণ উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ফেলিক্স রাজের কথায়। তিনি সোমবার বলেন, “এই কোর্স চালুর সঙ্গে সেন্ট জেভিয়ার্সের ইতিহাসও খানিকটা জড়িয়ে। ১৮৬৭ সালে কলেজের বিজ্ঞানী এবং জেসুই ফাদার ইউজিন লাফন্ট তাঁর গবেষণার মাধ্যমে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কার কথা জানান, যা সত্যি প্রমাণিত হয়। ফলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানোও সম্ভব হয়। পাঠক্রম চালু করে তাই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানানোও আমাদের উদ্দেশ্য।”
রাজ্যের গ্রামেগঞ্জে বহু মানুষের এখন বজ্রপাতেও মৃত্যু হয়। সেই সংখ্যাটি কী ভাবে কমানো যায়, সে সম্পর্কিত একটি বইও প্রকাশ করা হয় সোমবার। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত এই বইটিতে কী ভাবে বজ্রপাতে মৃত্যুসংখ্যা কমানো যায়, সে সম্পর্কিত নানা কৌশল এবং পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছেন অভিজ্ঞরা। মারিয়ো বলেন, “আমরা আশা করছি এর মাধ্যমে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এই বই প্রকাশের ভাবনা। যা বইমেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলেও পাওয়া যাবে।”