—ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুতে আরও কয়েক জনের ভূমিকা পুলিশের আতশকাচের তলায় রয়েছে। গত ৯ অগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে কী ঘটেছিল? তা জানতে মরিয়া তদন্তকারীরা। এই নিয়ে ধৃত ১২ জনকে জেরাও চালাচ্ছেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন বেশ কয়েক জনের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। শুক্রবার পড়ুয়া এবং প্রাক্তনী মিলিয়ে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হবে। আরও কয়েক জনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
গত ৯ অগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর বাড়ি নদিয়ায়। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। র্যাগিংয়ের কারণে মৃত্যু বলে অভিযোগ করে ছাত্রের পরিবার। ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন ছাত্রের বাবা। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় গত শুক্রবার প্রথম গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক সৌরভ চৌধুরীকে। রবিবার সকালে আরও দু’জনে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত এবং মনোতোষ ঘোষ। তাঁদের জেরা করে বুধবার আরও ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানা এলাকার বাসিন্দা অসিত সর্দার, মন্দিরবাজারের সুমন নস্কর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাসিন্দা সপ্তক কামিল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। বাকিরা, জম্মুর বাসিন্দা মহম্মদ আরিফ (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা আসিফ আফজল আনসারি (চতুর্থ বর্ষ, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অঙ্কন সরকার (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং)। শুক্রবার সপ্তককে যাদবপুর হস্টেলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়। শুক্রবারই জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুই প্রাক্তনী পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা নাসিম আখতার এবং মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা হিমাংশু কর্মকার। বাকি ধৃত কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া সত্যব্রত রায়। তাঁর বাড়ি হরিণঘাটায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন রাত ১০টা ৫ মিনিটে সত্যব্রতই ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে ফোন করেছিলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা এক এক জন এক এক রকম বয়ান দিচ্ছেন। তাঁদের বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা সকলেই নিজেদের ‘বাঁচানোর চেষ্টা’ করছেন। অর্থাৎ, নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইছেন। কেউ কেউ আবার একে অন্যের বিরুদ্ধেও আঙুল তুলছেন। প্রয়োজনে ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে।