Gita Path at Brigade

রবিতে জমায়েতই চ্যালেঞ্জ, শনিতে গীতাপাঠের মহড়া দেখল ব্রিগেড, লক্ষ কণ্ঠের পথ চেয়ে সনাতনী শিবির

রবিবার ব্রিগেডে লক্ষ মানুষ একসঙ্গে গীতা পাঠ করবেন। এমনটাই দাবি আয়োজকদের। সেই কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অংশ না-নিলেও জমায়েতে প্রভাব পড়বে না বলেই দাবি আয়োজকদের।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৪৮
শনিবার বিকেলে ব্রিগেডের প্রস্তুতি দেখতে যান বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ।

শনিবার বিকেলে ব্রিগেডের প্রস্তুতি দেখতে যান বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।

ব্রিগেড ময়দানে রবিবার ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি। কথা দিয়েও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রায় শেষবেলায় সফর বাতিল করার পরে হতাশা কাটিয়ে আয়োজকেরা শুক্রবারও চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন, লক্ষ কণ্ঠের লক্ষ্য থেকে তাঁরা সরছেন না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ব্রিগেডের প্রস্তুতি পরিদর্শনের পরে জানান, এক লাখ ৩০ হাজারের বেশি জমায়েত হবে। শনিবার ব্রিগেডে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তবে তিনি জমায়েত নিয়ে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করেননি। আর কর্মসূচির প্রধান সংগঠক মানস ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার এই দিনেই টেট পরীক্ষা ফেলায় অনেকেই ইচ্ছা থাকলেও আসতে পারবেন না ব্রিগেডে। তা সত্ত্বেও আমাদের কর্মসূচি পূর্ব ঘোষণা মতোই হবে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক হাজার মানুষ কলকাতায় এসে গিয়েছেন। বিভিন্ন মঠ, মন্দিরে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।’’

Advertisement

ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার সকাল ১০টায় শুরু হবে কর্মসূচি। প্রথমে ভজন পরিবেশন এবং তার পরে শোভাযাত্রা করে আসবেন দ্বারকা মঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী। তিনি দু’দিন আগেই কলকাতায় চলে এসেছেন। সাড়ে ১১টায় হবে গীতা আরতি। এর পরে সদানন্দের বক্তৃতা, নজরুলগীতি পরিবেশন এবং শঙ্খবাদন। ৭০ ও ৬০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে গান ও শঙ্খ বাজানোয় বিশ্বরেকর্ড গড়ার লক্ষ্য রয়েছে আয়োজকদের। সেই পর্ব শেষ হলেই মূল অনুষ্ঠান সমবেত কণ্ঠে গীতাপাঠ। সে ক্ষেত্রেও বিশ্বরেকর্ড হবে বলে দাবি আয়োজকদের। জানা গিয়েছে, রেকর্ড যাচাই করার জন্য দেশ, বিদেশের প্রতিনিধিরা কলকাতায় এসে গিয়েছেন। রবিবার কর্মসূচি চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।

শনিবার গীতাপাঠের মহড়া চলে ব্রিগেড ময়দানে।

শনিবার গীতাপাঠের মহড়া চলে ব্রিগেড ময়দানে। — নিজস্ব চিত্র।

শনিবার সন্ধ্যাতেও ব্রিগেডে মঞ্চ তৈরির কাজ চলে। অন্যান্য প্রস্তুতি মোটামুটি শেষ। ঠিক হয়েছে, আয়োজকদের ঠিক করা ট্রেন ছাড়াও বাসে ও ট্রাকে করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসবেন অংশগ্রহণকারীরা। তবে বেশিটাই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে। উত্তরবঙ্গ থেকে যে খুব বেশি প্রতিনিধিত্ব থাকবে না সেটা আগেই জানিয়েছেন আয়োজকেরা। শুক্রবার শুভেন্দু দাবি করেন, নিজেদের উদ্যোগে হাজার পাঁচেক অংশগ্রহণকারী ব্রিগেডে আসবেন উত্তরবঙ্গ থেকে।

তবে আয়োজকেরা লক্ষ মানুষের জমায়েতের দাবি করলেও কলকাতায় যানজট হতে পারে বলে পুলিশ মনে করছে না। এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে কোনও মন্তব্য করা না হলেও শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্রিগেড সমাবেশের জন্য যান নিয়ন্ত্রণের কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। তবে এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বাইরে থেকে কোনও যানবাহন ব্রিগেডে এলে তার পার্কিং যথাযথ জায়গাতেই করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নজর রাখতে ব্রিগেড ময়দান সংলগ্ন এলাকা ছাড়াও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

পুলিশ যেমনটাই ভাবুক আয়োজকদের ভরসা গীতাপ্রেমীদের উপরেই। আয়োজকদের পক্ষে মানস বলেন, ‘‘গীতার টানেই সনাতনীরা আসবেন। দলে দলে মানুষ ব্রিগেড ভরিয়ে দেবেন।’’ মুখে স্বীকার না-করলেও আয়োজকদের মধ্যে একটা চিন্তা রয়েই গিয়েছে। মোদী আসবেন না জানার পরে অনেকেই আগ্রহ হারিয়েছেন বলে মনে করছেন আয়োজকদের একাংশ। আরও চিন্তা উত্তুরে হাওয়া আর ঠান্ডা নিয়ে। গ্রাম-গঞ্জ থেকে যাঁরা আসবেন তাঁদের রওনা দিতে হবে অনেক সকালে। আর রবিবার ভোরে শীতের কাঁপুনি কেমন থাকে সেটাও জমায়েতে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সে সবের চিন্তা ছেড়ে শনিবার সারা দিনই ব্রিগেডে নির্মীয়মাণ মঞ্চে চলল গীতাপাঠের মহড়া। সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হলে নজরুলের গান— ‘‘হে পার্থসারথি! বাজাও বাজাও পাঞ্চজন্য শঙ্খ...।’’

Advertisement
আরও পড়ুন