মৃত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ছবি: সংগৃহীত।
আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে হাড় ভেঙে যাওয়ার কথাও উল্লেখ রয়েছে। শরীরে মিলেছে একাধিক ক্ষতচিহ্ন। মুখে, ঠোঁটে, পেটে, হাতে-পা ও যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এখানেই প্রশ্ন ওঠে, শুধুই কি এক জন জড়িত এই ঘটনায়? এক জনের পক্ষে কি সম্ভব এই নির্যাতন?
যখন এমন বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে আসছে, ঠিক সেই আবহে মৃত চিকিৎসকের বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও। তাঁরা মৃত চিকিৎসকের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন। বেরিয়ে মমতা কার্যত কলকাতা পুলিশকে সময় বেঁধে দেন। রবিবারের মধ্যে তদন্তের কিনারা না হলে, সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলার সময় পাশেই ছিলেন পুলিশ কমিশনার। মুখ্যমন্ত্রীর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে একাধিক অভিযুক্তের জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি তিনি।
বিনীত গোয়েল জানান, সেই সময় ঘটনাস্থলের কাছাকাছি যাঁরা ছিলেন, তাঁদের একে একে ডাকা হচ্ছে। যদি আরজি করের আন্দোলনকারীদের কারও উপর সন্দেহ থাকে, সে কথা পুলিশকে জানানোর জন্য ফের অনুরোধ করেন তিনি। পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমরা একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছি। যদি কারও উপর সন্দেহ থাকে, তা আমাদের জানান। নাম গোপন রেখেও জানাতে পারেন। সশরীরে এসেও জানাতে পারেন।”
উল্লেখ্য, রবিবারই মৃত চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়েছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা। তিনি মৃতার পরিবারের হাতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দেন। এর পর সোমবার মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনার দেখা করেন পরিবারের সঙ্গে। বিনীত গোয়েল জানান, পরিবারের লোকেদের দাবি সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সর্ব ক্ষণ যোগাযোগ রাখা হবে এবং তদন্ত কোন পথে এগোচ্ছে, তা পরিবারকে জানানো হবে বলেও আশ্বস্ত করেন। একাধিক অভিযুক্ত জড়িত থাকার তত্ত্ব যে পুলিশ একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না, তা-ও কার্যত বুঝিয়ে দেন। পুলিশ কমিশনার বলেন, “যদি আরও কেউ জড়িত থাকেন, আমি নিশ্চিত আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করতে পারবে। তার পরও যদি পরিবার সন্তুষ্ট না থাকে, সে ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তা-ই হবে।”