যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক বিতর্কের আবহে এ যেন অন্য যাদবপুরের উড়ান। সদ্য প্রকাশিত স্নাতকোত্তর স্তরে উচ্চ শিক্ষার প্রবেশিকা তথা গেট (গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিচুড টেস্ট ফর ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং আইআইটি-র জ্যাম (জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স)-এ বাংলার মুখ কার্যত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ই।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সর্বভারতীয় প্রথম স্থান, ইনস্ট্রুমেন্টেশনে দ্বিতীয়, ভূতত্ত্ব এবং অর্থনীতির প্রথম স্থান যাদবপুরের সাফল্যের আয়না বলা যায়। তবে এটুকুই সব নয়, সামগ্রিক ভাবে দেখা যাচ্ছে, সর্বভারতীয় স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগে প্রথম ১০০ জনে যাদবপুরের পড়ুয়াদের উপস্থিতি রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক প্রীতম আইচ নিজেও যাদবপুরের প্রাক্তনী। তিনি বলছিলেন, “যাদবপুর কখনও কিছু বিতর্কিত কারণে শিরোনামে আসে। কিন্তু সার্বিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের পরিবেশ খারাপ নয়, সেটাই সর্বভারতীয় স্তরের ফলাফলগুলি বোঝায়। যাদবপুরে এখনও যৎসামান্য খরচে গরিব ঘর বা প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারাও শিক্ষা লাভ করেন। গেটে সফলদের মধ্যেও নানা শ্রেণির কৃতীরা আছেন।”
অর্থনীতিতে এ বার দেশে প্রথম ৫০ জনের মধ্যে যাদবপুরের ছ’জন আছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন ছাত্রী। সারা দেশে রসায়নে প্রথম ১০০ জনের সাত জন এবং ভূতত্ত্বে প্রথম ১০০ জনের পাঁচ জন যাদবপুরের। এর বাইরেও নজরকাড়া ফল রয়েছে। গেটের ফল আইআইটি বা দেশের সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠের রাস্তা খুলে দেয়। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চাকরিরও দরজা খোলে। অর্থনীতির অধ্যাপিকা তন্ময়ী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংবাদমাধ্যমের একাংশে নিন্দিত যাদবপুরের সেটাই আসল পরিচয় নয়।” পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক তথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “নানা প্রতিকূলতার মধ্যে যাদবপুরের সাফল্যের ধারাবাহিকতা ফেলনা নয়। এই নজির খেয়াল করে সরকার যাদবপুরকে প্রাপ্য স্বীকৃতি বা পরিকাঠামোগত মর্যাদা দিলে সার্বিক শিক্ষার হালই উন্নততর হবে।”