যাদবপুরে চলছে ছাত্রবিক্ষোভ। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবারেই ইউজিসি-র চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যাদবপুরে এসেছেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সেখানেই ইউজিসি-র একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় কর্তৃপক্ষকে। যার কোনওটিরই সদুত্তর মেলেনি বলে ইউজিসি সূত্রে খবর।
ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে র্যাগিং-বিরোধী কমিটি থাকা আবশ্যিক। যাদবপুরে সেই কমিটি ছিল কি না, থাকলে তার কী ভূমিকা, কমিটিতে কে কে ছিলেন, জানতে চাওয়া হয়েছে ইউজিসি-র তরফে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, র্যাগিং-বিরোধী কমিটি থাকলেও যাদবপুরে তা তেমন সক্রিয় নয়। কেন কমিটি অচল, সে বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেলের জন্য কী বন্দোবস্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ, জানতে চায় ইউজিসি। প্রথম বর্ষের ছাত্রদের আলাদা হস্টেলে কেন রাখা হত না? সকলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হত কি? ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে কি র্যাগিং-বিরোধী ফর্ম পূরণ করানো হয়? খুঁটিয়ে এ সব তথ্য জিজ্ঞাসা করেন ইউজিসি-র প্রতিনিধিরা।
ইউজিসি সূত্রে খবর, কর্তৃপক্ষের জবাবে তারা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। মঙ্গলবারেও যাদবপুরেই থাকছেন ইউজিসি-র প্রতিনিধিরা। তাঁরা মেন হস্টেল, হস্টেল এবং ক্যাম্পাস পরিদর্শন করবেন বলে খবর। পড়ুয়াদের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন।
এর আগে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে যাদবপুরে তিন বার চিঠি দিয়ে কর্তৃপক্ষের জবাব তলব করেছিল ইউজিসি। প্রতি ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাবে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ বার সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় ইউজিসি অসন্তুষ্ট।
গত ৯ অগস্ট যাদবপুরের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের (স্নাতক) ছাত্র হস্টেলের তিন তলা থেকে পড়ে যান। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ছাত্র র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়েছে। বার বার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জবাব তলব করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্র মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক ছাত্রের বিরুদ্ধে কেবল পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ছিল। তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।