অনশনমঞ্চে চলছে গণস্বাক্ষর । ছবি: আনন্দবাজার অনলাইন
ধর্মতলায় অনশনমঞ্চের সামনের রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই অবস্থানে শামিল সাধারণ মানুষও।
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলার অনশনমঞ্চে শুরু হয়েছে গণস্বাক্ষর। জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে রয়েছে সিনিয়রেরা।
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা নগাদ ধর্মতলার অনশনমঞ্চে পৌঁছেছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং এসএসকেএম থেকে দু’টি আলাদা মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
মেডিক্যাল কলেজ এবং এসএসকেএম থেকে ধর্মতলার অবস্থামঞ্চের উদ্দেশে মিছিল শুরু করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন সিনিয়র ডাক্তাররাও। কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা ‘মহামিছিল’-এর ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের অনুমতি মেলেনি। তাই মেডিক্যাল কলেজ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করা হয়।
মিছিলে হাঁটছেন ডাক্তাররা। নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানমঞ্চের একাংশের ত্রিপল ছিঁড়ে গেল ভারী বৃষ্টির জেরে। এই দুর্যোগ মাথায় নিয়েও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কিছু পরে বৃষ্টি নামে। প্রথমে হালকা, তার পর ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। সেই বৃষ্টির জল ত্রিপলে জমে সেটি ছিঁড়ে যায়। মূল মঞ্চের পাশের অংশের ত্রিপল ছিঁড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বৃষ্টিতে ধর্নামঞ্চের ত্রিপল ছিঁড়ে গিয়েছে। ছবি: রিঙ্কি মজুমদার।
মঙ্গলবার বিকেলে জুনিয়র ডাক্তারদের ‘মহামিছিল’-এ অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনটাই জানাল রাজ্যের জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সোমবার গভীর রাতে পুলিশের তরফে তাদের মেল করে এই কথা জানানো হয়।
রাজ্যের জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তি। ছবি: আনন্দবাজার অনলাইন।
পুলিশের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন এক চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা অন্যায় করেছেন তাঁদের শাস্তি দিন। এই সিস্টেম যাতে স্বচ্ছ হয় সেই বিষয়টি দেখুন। এই স্বচ্ছ ব্যবস্থার লাভ সকলে পাবে।’’
জুনিয়র ডাক্তারদের এই অনশনে যোগ দেবেন সিনিয়র চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা। এ ছাড়াও একটি ‘মহামিছিল’-এরও ঘোষণা করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টের সময় কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলার অনশনমঞ্চ পর্যন্ত মিছিল হবে।
পুলিশের সামনে হাত জোড় করে নিজের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন এক মহিলা চিকিৎসক। বললেন, ‘‘আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নই। এটা আপনারা কেন বুঝতে পারছেন না? আমরা একটা ঘুণধরা পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে লড়ছি।’’
চৌকির পর এ বার জলের গাড়ি আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ধর্নামঞ্চে আসার আগে জলের গাড়ির আটকানোর অভিযোগ তুললেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ধর্মতলায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় জুনিয়র ডাক্তাররা। দীর্ঘ বচসার পর জলের গাড়ি ছাড়ে পুলিশ।
এর আগে বায়ো টয়লেট বসানো নিয়ে অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। তার পর সোমবার চৌকি নিয়ে শুরু হয় অভিযোগ। ডাক্তারেরা জানান, অনশনমঞ্চের জন্য কয়েকটি চৌকি আনিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ চৌকিবোঝাই সাইকেল ভ্যান আটকে দেয়। মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছয়নি চৌকি। এ ছাড়াও কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার আনানো হয়েছিল। সেগুলিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছিল বলে অভিযোগ।
ধর্মতলায় আমরণ অনশন চালানো সাত জুনিয়র চিকিৎসকের শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে জানিয়ে আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, “প্রশাসনের উচিত বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করা। ওঁদের শরীরে চিরস্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।”
সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক করে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। অন্য দিকে, আন্দোলনের সমর্থনে জুনিয়র ডাক্তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিমিং হবে অনশনের।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য ধর্মতলা চত্বরে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবার রাত থেকে চলছে আমরণ অনশন।