(বাঁ দিকে) সুহৃতা পাল এবং বুলবুল মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
দিনভর বিক্ষোভের পর অবশেষে আন্দোলকারীদের দাবি মেনে নিল স্বাস্থ্য ভবন। বদলি করা হল আরজি করের চার আধিকারিককে। বদলি হওয়া আধিকারিকদের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালের সুপার, অতিরিক্ত সুপার, সদ্য দায়িত্বে আসা অধ্যক্ষ এবং চেস্ট মেডিসিনের প্রধান।
বুধবার সিজিও কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্য ভবন অভিযান করেছিলেন আরজি করের আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। তাঁদের প্রতিনিধিদল স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে স্মারকলিপিও জমা দেয়। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, আরজি করের বর্তমান অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল এবং সুপার বুলবুল মুখোপাধ্যায়-সহ চার আধিকারিককে সরাতে হবে। সেই দাবি মেনে নিয়ে বুধবার রাতে হাসপাতালের চার কর্তাকে বদলির সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য ভবন। সুহৃতার জায়গায় আরজি করের নতুন অধ্যক্ষ হচ্ছেন মানস কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন সুপার হচ্ছেন সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়। সুহৃতাকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ করা হল।
মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর চাপে পড়ে আরজি করের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। এর পরেই সন্দীপকে ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ করে স্বাস্থ্য ভবন। সেই একই সময়েই সুহৃতাকে আরজি করের অধ্যক্ষ করা হয়। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সেই ভাবে হাসপাতালমুখো হননি নতুন অধ্যক্ষ! বুধবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের সময় তা নিয়ে ক্ষোভও উগরে দেন আন্দোলনকারীরা।
আরজি কর-কাণ্ডের পর সুপার পদ থেকে সরানো হয়েছিল সঞ্জয় বশিষ্ঠকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বুলবুলকে। এ বার তাঁকেও সরানো হল। বুলবুল আপাতত আরজি করের অধ্যাপক হিসাবেই কাজ করবেন। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর হাসপাতাল থেকে যিনি বাড়িতে ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল, সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকেও বদলি করা হল। এ ছাড়া নিহত চিকিৎসক যে বিভাগে কর্মরত ছিলেন, সেই চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরীকেও বদলি করা হয়েছে। তাঁকে পাঠানো হল মালদা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানো চেস্ট মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কাজ করবেন তিনি।
রাজ্য সরকার আরজি করের চার আধিকারিককে সরালেও এখনই কর্মবিরতি তোলা হবে না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে নিয়ে নির্দেশিকায় কী লেখা থাকছে, তার উপর সব কিছু নির্ভর করছে। আন্দোলনকারী পড়ুয়া মহম্মদ আহমেদ লস্কর বলেন, ‘‘আমাদের দাবি, সন্দীপ ঘোষকে ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ থেকেও সরাতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে হবে, উনি যাতে ভবিষ্যতে কোনও প্রশাসনিক কাজে যোগ দিতে না পারেন। এটা যত ক্ষণ না হচ্ছে, কর্মবিরতি চলবে।’’