বালিগঞ্জের এক বেসরকারি দফতর থেকে ইডি উদ্ধার করেছিল ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। ছবি: ইডি সূত্রে প্রাপ্ত।
কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে বালিগঞ্জের এক বেসরকারি দফতরে বুধবার থেকে রাতভর তল্লাশি চালিয়েছিলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। উদ্ধার করেছিল ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। এই ঘটনার তদন্তেই এ বার ইডির হাতে এল আরও এক ব্যক্তির নাম। ইডি সূত্রের দাবি, মনজিৎ সিংহ গ্রেওয়াল ওরফে জিটি ভাই নামে ওই ব্যক্তির মাধ্যমেই কয়লা পাচারের টাকা সরানোর চেষ্টা করতেন কোনও এক ‘প্রভাবশালী’ রাজনীতিক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এই জিটিভাইয়ের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপনির্বাচনে প্রচারের দায়িত্ব সামলেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জিটি ভাইয়ের ছবিও প্রকাশ করেছেন তিনি।
এ দিকে বালিগঞ্জের যে সংস্থায় তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি, তার মালিক বিক্রম সাকারিয়াকে দিল্লিতে তলব করেছে ইডি।
ইডির কাছে খবর ছিল, কোনও এক ‘প্রভাবশালী’ রাজনীতিক কয়লা পাচারের টাকা নয়ছয়ের চেষ্টা করছেন। সেই মতো ইডির তরফে ফাঁদ পাতা হয়েছিল বলে খবর। আর তা পেতে বালিগঞ্জের দফতরে তল্লাশি চালিয়ে ১.৪ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে তারা। আর এই ঘটনায় জিটি ভাইয়ের নাম উঠে এসেছে। এই জিটি ভাইয়ের মাধ্যমেই কয়লা পাচারের টাকা নয়ছয়ের চেষ্টা করেন ‘প্রভাবশালী’ এক রাজনীতিক, দাবি ইডির একটি সূত্রের। ইডির আরও দাবি, এক মন্ত্রীর ‘বেআইনি’ টাকাও ‘হ্যান্ডল’ করতেন জিটি ভাই।
Manjit Singh Grewal @ Jitta; who handled @MamataOfficial's Bhabanipur Byelection campaign, has been named in @dir_ed's Press Release.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 9, 2023
He can be seen alongside CM & her politician brother Kartik Banerjee.
Will CM clarify, like Partha Chatterjee, she'd also take action against him? pic.twitter.com/kx78xSoPEl
এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই টুইট করেছেন শুভেন্দু। তিনি লিখেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবানীপুরের উপনির্বাচন সামলেছেন যে জিটি ভাই, তাঁর নাম এখন ইডির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর রাজনীতিক ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা গিয়েছে ওই ব্যক্তিকে। মুখ্যমন্ত্রী কি এ বার স্পষ্ট করবেন যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তাঁর বিরুদ্ধেও তিনি পদক্ষেপ করবেন?’’
ইডি সূত্রে খবর, সালাসার নামে একটি গেস্ট হাউস ৯ কোটি টাকা দিয়ে কেনাবেচা চলছিল বালিগঞ্জে গজরাজ গোষ্ঠীর দফতরে। যদিও ওই সম্পত্তির আসল দাম ১২ কোটি টাকা। কিন্তু চুক্তিপত্রে দেখানো হয়েছিল তিন কোটি। ইডির দাবি, কয়লা পাচারের টাকা দিয়েই ওই সম্পত্তি কেনা হচ্ছিল। আর এ ভাবে আসলে কালো টাকা সাদা করা হচ্ছিল। সম্পত্তির দামের ৯ কোটি টাকার মধ্যে ১.৪ কোটি টাকা নগদে দেওয়া হয়েছিল। সে সময়ই ফাঁদ পেতে তল্লাশি শুরু করে ইডি। উদ্ধার করে টাকা।
কয়লা পাচারকাণ্ডে বিভিন্ন সাক্ষীর বয়ান, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ঘেঁটে খোঁজ পাওয়ার পর বুধবারেই বালিগঞ্জের দফতরে হানা দেয় ইডি। দফতরের ভিতর প্রচুর নগদ টাকার বান্ডিল রাখা ছিল বলে জানতে পারে তারা। টাকা গোনার যন্ত্র নিয়েই সেখানে যান ইডি-র আধিকারিকেরা। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নগদ টাকার পরিমাণ ১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
ভোরবেলা পর্যন্ত তল্লাশি চালানোর পর আরও ৪০ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দিল্লির আধিকারিকেরাও ছিলেন ওই দলটিতে। মোট ১০ থেকে ১২ জন আধিকারিক তল্লাশি অভিযান চালান। এই সংস্থাটির অধীনে একাধিক সংস্থা রয়েছে বলে জানতে পেরেছে ইডি।