Kolkata Doctor Rape-Murder Case

সন্দীপকে ন্যাশনালে অধ্যক্ষ করার নির্দেশিকা সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি, ২৪ ঘণ্টা সময় দিলেন আন্দোলনকারীরা

সোমবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে যে বদলি-নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে। দাবি ন্যাশনাল মেডিক্যালে আন্দোলনরত চিকিৎসক ও চিকিৎসক পড়ুয়াদের। এর জন্য রাজ্যকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিলেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ১৮:১৫
ন্য়াশনাল মেডিক্যালে চিকিৎসকদের আন্দোলন।

ন্য়াশনাল মেডিক্যালে চিকিৎসকদের আন্দোলন। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্যকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, ‘বিতর্কিত’ চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষকে এখনই কোথাও অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। কিন্তু তার পরও প্রতিবাদ, আন্দোলন জারি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। আন্দোলনরত চিকিৎসকরা চাইছেন, স্বাস্থ্য ভবন থেকে সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যালে অধ্যক্ষ করে পাঠানোর নির্দেশ সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। রাজ্যকে এই নিয়ে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমাও বেঁধে দিলেন ন্যাশনাল মেডিক্যালের আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা জানান, “আমরা কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দিতে চাই। সোমবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেটি প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা ওই নির্দেশ কোনও ভাবেই মানছি না। সোমবার থেকে আজ পর্যন্ত যা যা হয়েছে (অধ্যক্ষের বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে), সেটি আইওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়। একটি প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষের ভূমিকা ছাত্রদের জন্যই থাকা উচিত।” উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যু-তদন্তের আবহেই সোমবার সেখানকার অধ্যক্ষ পদ ছেড়ে দেন সন্দীপ। শুধু তাই নয়, চাকরি ছাড়ার ইচ্ছাপ্রকাশও করেন তিনি।

কিন্তু বাস্তব চিত্র যা দেখা গেল, সোমবার সকালে আরজি করের অধ্যক্ষের পদ ছাড়তে না ছাড়তেই বিকেলে অন্য এক সরকারি হাসপাতালে সমমর্যাদার পদে বসানো হয় তাঁকে। পাঠানো হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করে। সোমবার দুপুরেই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার সন্দীপকে অন্য কোথাও সরিয়ে দেবে। এর পর রাতেই এই বদলির নির্দেশিকা। সন্দীপকে ন্যাশনালের অধ্যক্ষ করার পর থেকেই আপত্তি জানান সেখানকার চিকিৎসক ও চিকিৎসক পড়ুয়াদের একাংশ। সন্দীপকে ন্যাশনালে পাঠানোর প্রতিবাদে শুরু হয় কর্মবিরতি।

যদিও মঙ্গলবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠকে ন্যাশনাল মেডিক্যালের আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা বোঝানোর চেষ্টা করেন, তাঁদের কর্মবিরতির জন্য হাসপাতালের রোগী পরিষেবায় কোনও প্রভাব পড়ছে না। তাঁরা বলেন, “জরুরি পরিষেবা সম্পূর্ণ সচল রয়েছে। আমাদের কর্মবিরতি চলছে। ইন্টার্ন, হাউস-স্টাফ, পিজিটি (স্নাতকোত্তর চিকিৎসক পড়ুয়া) ডাক্তারেরা কর্মবিরতি বহাল রেখেছেন। কিন্তু জরুরি বিভাগ-সহ সর্বত্র পরিষেবা চালু রয়েছে। অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধান ও অন্যান্য চিকিৎসা সহকর্মীরা কাজ করছেন। রোগী পরিষেবা কোনও ভাবেই বিঘ্নিত হচ্ছে না। রোগী বা তাঁদের পরিবারের কোনও সমস্যা আমরা হতে দিচ্ছি না।”

উল্লেখ্য, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে সোমবার পর্যন্ত অধ্যক্ষ হিসাবে কর্মরত ছিলেন চিকিৎসক অজয়কুমার রায়কে স্বাস্থ্য ভবনে বদলি করা হয়। বদলি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সেখানে ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ হিসাবে কর্মরত থাকবেন তিনি। আর ন্যাশনালের অধ্যক্ষ হিসাবে পাঠানো হয়েছিল সন্দীপকে। তবে কি এবার অজয়কুমারকেই অধ্যক্ষ হিসাবে ফেরত চাইছেন ন্যাশনালের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা? এ নিয়ে প্রশ্নে অবশ্য মঙ্গলবার বিকালে কোনও উত্তর দেননি তাঁরা। তাঁরা শুধু চাইছেন স্বাস্থ্য ভবন থেকে যে বদলি-নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল সোমবার, তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করা হোক।

আরও পড়ুন
Advertisement