বেসরকারি ট্যাক্সি পরিষেবাতে কি এ বার কর্পোরেট থাবা? —ফাইল ছবি।
কলকাতা তথা শহরতলির বেসরকারি ট্যাক্সি পরিষেবায় কী বৃহৎ পুঁজির প্রবেশ ঘটতে চলেছে? বুধবার পরিবহণ দফতর থেকে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে এই বিতর্ক শুরু হয়েছে। আর বিজ্ঞপ্তি হাতে পাওয়ার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বেসরকারি ট্যাক্সি ইউনিয়নগুলি। তারা হুমকি দিয়েছে, এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। মূলত হলুদ ট্যাক্সি চালকেরাই পরিবহণ দফতরের এই সিদ্ধান্তের জানার পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। তাদের নেতৃত্বের কথায়, ‘‘বৃহৎ পুঁজিপতিরা রাস্তায় বড় সংখ্যায় ট্যাক্সি-সহ গণপরিবহণে সহায়ক যানবাহন নামানোর সুযোগ পেলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাঁরাই।’’
ঘটনায় প্রকাশ বুধবার সন্ধ্যায় পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে কলকাতা শহরের ঐতিহ্য হলুদ ট্যাক্সি রক্ষা নিয়ে একটি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সেই বিজ্ঞপ্তির দ্বিতীয় ভাগে লেখা হয়, কোনও কোম্পানি বা সংস্থা যদি এক মাসে ২০টি যানবাহন কিনে রেজিস্ট্রি করাতে চায় তা হলে পরিবহণ দফতর সেই অনুমতি দেবে। সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, সংস্থা যদি সেই যানবাহনে নিজস্ব রং দিয়ে পরিচিতি পেতে চায়, তা হলে পরিবহণ দফতর থেকে তা অনুমোদন করাতে হবে।
পরিবহণ দফতরের এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি তুলে এআইটিইউসি সমর্থিত ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি অপারেটার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির আহ্বায়ক নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বড় বড় কোম্পানিকে আমাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে পরিবহণ দফতর। এ ভাবে একতরফা সিদ্ধান্ত আমরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারব না। আমরা পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানাব।’’ ক্যালকাটা ট্যাক্সির তরফে যুগ্ম সম্পাদক অরুণ সিংহ বলেন, ‘‘কর্পোরেট সেক্টরকে এমন সুযোগ করে দিয়ে আমাদের মতো ট্যাক্সি মালিকদের শেষ করে দিতে চাইছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত আমরা কোনও ভাবেই মেনে নেব না, তাই আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডেকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নামার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’
বৃহস্পতিবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের কারণে সরকারি ছুটি ছিল। তাই ট্যাক্সি চালকদের সংগঠনের ইচ্ছে থাকলেও, পরিবহণ দফতরে গিয়ে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানানোর সুযোগ হয়নি। তবে শুক্রবার পরিবহণ দফতর খুললেই তারা এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং সচিবের দ্বারস্থ হবেন।