West Bengal Health Department

ভুল শুধরেও প্রসূতিদের টাকা পাচ্ছে না রাজ্য

রাজ্যের ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৬৩৩ জন প্রসূতি এই মুহূর্তে কেন্দ্রের ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’-র অর্থের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন। কবে টাকা আসবে বা আদৌ আসবে কিনা, সেই উত্তর রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা দিতে পারেননি।

Advertisement
পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৪ ০৯:০৩
স্বাস্থ্য ভবন।

স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রের কাছে নিজেদের ‘ভুল স্বীকার করে’ তা সংশোধন করার পরেও রাজ্যের সদ্য প্রসূতিদের প্রাপ্য টাকা দিল্লি থেকে জোগাড় করতে ব্যর্থ হচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

ফলে রাজ্যের ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৬৩৩ জন প্রসূতি এই মুহূর্তে কেন্দ্রের ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’-র অর্থের জন্য হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন। কবে টাকা আসবে বা আদৌ আসবে কিনা, সেই উত্তর রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা দিতে পারেননি। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের কথায়, ‘‘তিন লক্ষেরও বেশি মায়ের টাকা বাকি রয়েছে। আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছি।’’

সদ্য মা হওয়া মহিলা ও তাঁর শিশুর অপুষ্টি নিবারণে ২০১৭ সালে কেন্দ্র চালু করেছিল ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা।’ এই প্রকল্পে প্রথম বার মা হলে প্রসূতি পাবেন ৫ হাজার টাকা। দ্বিতীয় বার মা হওয়ার ক্ষেত্রে কন্যাসন্তান হলে মা পাবেন ৬ হাজার টাকা। কিন্তু কেন্দ্রের আরও একাধিক প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পের নাম থেকেও ‘প্রধানমন্ত্রী’ শব্দটি বাদ দিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। প্রকল্পের নাম রাখা হয় ‘বাংলা মাতৃ প্রকল্প’। শুরু হয় নাম নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রথম কয়েক বছর কেন্দ্র বার বার পশ্চিমবঙ্গকে নাম বদল করতে বলেছে। কিন্তু তা করা হয়নি। ২০২২ সালে কেন্দ্র এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের টাকা বন্ধ করে দেয়। তখন প্রায় চার লক্ষ মায়ের টাকা আটকে যায়। রাজ্য তখন ওই প্রকল্পের নাম বদলের আশ্বাস দিলে ২০২২-এর সেপ্টেম্বরে কেন্দ্র ১৬০ কোটির মতো টাকা ছাড়ে। কিন্তু ফের নাম বদলে রাজ্য গড়িমসি করছে, এই অভিযোগে ২০২৩ সালের মে মাস থেকে কেন্দ্র এই প্রকল্পে রাজ্যকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে।

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, এর পরে প্রকল্পের নাম বদল করে ‘প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা’ই রাখা হয় এবং নতুন মায়েদের নাম অনলাইনে নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, তার পরেও গত বছর মে মাসের পর থেকে কেন্দ্র এই প্রকল্পে রাজ্যকে কোনও টাকা দেয়নি।

২০২৩-এর এপ্রিল মাস থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ২৭৪ জন সদ্য প্রসূতি এই প্রকল্পে টাকার জন্য আবেদন করেছেন। আবেদন গৃহীত হয়েছে ৩ লক্ষ ১২ হাজার ৬৩৩ জনের। এঁদের বকেয়া প্রায় ১০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের নিয়মানুযায়ী, মায়েদের নাম নথিভুক্ত হওয়ার পরে ৪৭০ দিন পেরিয়ে গেলে আর টাকা পাওয়া যাবে না। ফলে যাঁদের নাম নথিভুক্ত রয়েছে, তাঁরাও অচিরেই বাতিলের খাতায় চলে যাবেন বলে আশঙ্কা।

আরও পড়ুন
Advertisement