ঘরে-বাইরে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মিছিল। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
প্রতি ১০ মিনিটে খুন হন এক জন নারী। আর সেই খুনের নেপথ্যে রয়েছে লিঙ্গভিত্তিক হিংসা। এমনই তথ্য উঠে এসেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ২০২৩ সালের পরিসংখ্যানে। ভারতেও ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরোর (এনসিআরবি) হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে লিঙ্গ-হিংসার প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। লিঙ্গভিত্তিক হিংসা কমানোর লক্ষ্যে তাই ২৫ নভেম্বর দিনটি পালিত হল নারী নির্যাতন নির্মূলের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে। এই দিন থেকে শুরু হয়ে আগামী ১৪ দিন বিশ্ব জুড়ে চলবে নানা কর্মসূচি।
নারী ও বালিকাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের হিংসার ঘটনা বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম বড় কারণ বলে জানাচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। এনসিআরবি-র পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, ভারতেও এই ধরনের অপরাধ ক্রমশ বেড়েছে। পাশাপাশি, বহু ক্ষেত্রেই বিষয়টি সামনে আসে না বা নির্যাতিতা অভিযোগ করতে সাহস পান না বলেও আশঙ্কা। সম্প্রতি আর জি কর-কাণ্ডের আবহে বৃহত্তর পরিসরে আলোচিত হচ্ছে লিঙ্গভিত্তিক হিংসার বিষয়টি। চিকিৎসক-ছাত্রীর খুনের বিচার চেয়ে পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষ। ঘরে-বাইরে মেয়েদের নিরাপত্তার অভাবের দিকটি তার পর থেকেই আলোচিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘সর্বত্র নারীর নিরাপত্তা চাই’ ডাক দিয়ে ১৪ দিন ধরে নানা ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সোমবার এই কর্মসূচির সূচনা হয় গড়িয়াহাট থেকে কালীঘাট মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত পদযাত্রা দিয়ে। সেখানে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছাড়াও যোগ দিয়েছিল আরও ২৮টি সংগঠন ও নেটওয়ার্ক।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বয়ম’-এর অধিকর্তা অমৃতা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘নারী নির্যাতন ও লিঙ্গভিত্তিক হিংসার মতো বিষয়গুলি শুধু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজের ক্ষেত্র বলেই মনে করেন অনেকে। মাঝেমাঝে গণমাধ্যমেও এ নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে সে ভাবে আলোচিত হয় না। আর জি করের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষ যে ভাবে পথে নেমেছেন, তাতে
বিষয়টি নিয়ে আরও সচেতনতা তৈরির সুযোগ তৈরি হয়েছে। মেয়েরা যেমন আরও বেশি সংখ্যায় কর্মক্ষেত্রে যোগদান করছেন, তেমনই বাড়ছে নানা ভাবে নির্যাতনের ঘটনাও। সচেতনতা বাড়িয়ে তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি যাতে মানসিকতার বদলের মাধ্যমে এমন ঘটনা কমানো যায়, সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের।’’