যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শীঘ্রই সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে। ক্যামেরার জন্য বাইরের একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, হস্টেলের বিভিন্ন জায়গায় মোট ১০টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে ক্যামেরা বসানো হবে। আপাতত মোট ২৬টি সিসি ক্যামেরার অর্ডার দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে গত ৯ অগস্ট নদিয়ার ছাত্রের মৃত্যুর পর থেকেই ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবি জোরালো হয়েছে। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথাও সিসি ক্যামেরা নেই বলেই সেখানে নিয়মকানুন মানা হয় না। রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে একাধিক বার সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি জানানো হয়েছে। মামলা হয়েছে আদালতেও। এই পরিস্থিতিতে যাদবপুরের নতুন অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই জানিয়ে দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও যাদবপুরে একাধিক বার সিসি ক্যামেরা বসানোর চেষ্টা কথা হয়েছিল। কিন্তু পড়ুয়াদের একাংশ এই নজরদারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বারবার। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরাও কেউ কেউ অতীতে এই নজরদারির বিরোধিতা করেছেন। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে সিসি ক্যামেরা বসানো আর ঠেকানো যায়নি।
গত ৯ অগস্ট যাদবপুরের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের (স্নাতক) এক ছাত্র মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান। পরের দিন ভোরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ছাত্র র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন বলে দাবি। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা প্রত্যেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অথবা বর্তমান ছাত্র। অভিযোগ, হস্টেলে সিসি ক্যামেরার নজরদারি নেই। থাকলে সেই রাতে ছাত্রের সঙ্গে কী কী হয়েছিল, অনায়াসেই তা জানা যেত। ছাত্রমৃত্যুর পরের দিন রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী নদিয়ায় ওই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সিসি ক্যামেরার প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘যাদবপুর কি অন্য কোনও গ্রহ নাকি? অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে নিয়ম মানা হয়, কেন যাদবপুরে তা মানা হবে না?’’ তার পর থেকেই ক্যামেরার নজরদারির দাবি জোরালো হয়েছে।