পনেরো বছরের পুরনো বাস বাতিল মামলায় রাজ্য এখনও তাদের অবস্থান জানায়নি। —প্রতীকী চিত্র।
পনেরো বছরের পুরনো বাসের পারমিট নবীকরণ না করা ছাড়াও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই সব বাসকে বিবেচনা করা হবে না বলে বছর দুয়েক আগে নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। তাতে আপত্তি জানায় বাসমালিকদের একাধিক সংগঠন। ওই নির্দেশ আদৌ বৈধ কিনা, সেটাই আপাতত বাসের মেয়াদ বৃদ্ধির দাবিতে তাদের দায়ের করা মামলার মূল বিবেচ্য বিষয়।
এই মামলায় কেন্দ্র ও রাজ্যকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। পাশাপাশি, বছর দুয়েক আগের ওই নির্দেশিকার ভিত্তিতে পরিবহণ দফতরের পদক্ষেপ এই মামলার রায়ের উপরেই নির্ভর করবে। ফলে, এই অংশটিকে বাস বাতিল হওয়া ঠেকানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য বলে দাবি মামলাকারী একাধিক বাসমালিক সংগঠনের।
বাসমালিক সংগঠনগুলির দাবি ছিল, বাসের বয়সের পরিবর্তে স্বাস্থ্য ও দূষণ সংক্রান্ত মাপকাঠিকেই রাস্তায় বাস চলতে দেওয়ার শর্ত হিসাবে বিবেচনা করা হোক। তাদের আরও দাবি, এই মামলায় বছর দুয়েক আগে রাজ্যের তরফে জারি করা নির্দেশিকা কেন্দ্রের ১৯৮৯ সালের পরিবহণ আইনের পরিপন্থী। যেখানে সরকার স্বীকৃত ব্যবস্থায় স্বাস্থ্য এবং দূষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা হয়, সেখানে আচমকা বয়সের গেরোয় বাস বাতিল হয় কোন যুক্তিতে, এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের তরফে।
এই মামলায় রাজ্য এখনও তাদের অবস্থান জানায়নি। উল্টো দিকে, বাসমালিকদের মামলা করার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রের আইনজীবী। তাঁর দাবি, সরকারি বিধি বা ব্যবস্থায় বাসমালিকদের অধিকার খর্ব হওয়ার বিষয়টি তাঁদেরই দেখাতে হবে।
কেন্দ্রের কৌঁসুলির এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্যকে হলফনামা দিতে বলেছে আদালত। বাসমালিক সংগঠনগুলিকে পাল্টা হলফনামা দিতে আরও এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে। পাশাপাশি, দু’বছরের পুরনো সরকারি নির্দেশের প্রয়োগ সংক্রান্ত পদক্ষেপ এই মামলার রায়ের উপরে নির্ভর করবে বলে জানিয়েছে তারা।
সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা এ নিয়ে বলেন, ‘‘বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ আমাদের কাছে স্বস্তির বার্তা। মামলার নিষ্পত্তির উপরেই বাস বাতিল হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে। প্রথম থেকেই বাসের স্বাস্থ্যকে মাপকাঠি করার কথা বলছি।’’ পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনে বক্তব্য জানাব। গাড়ির মালিকদের পক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে।’’