Tea Garden

বৃষ্টি নেই, ‘বিপর্যয়ের’ ভয় চায়ের প্রথম ফ্লাশে

চা পর্ষদের নির্দেশে গত মরসুম শেষ হয়েছিল জলদি। এ বারে মরসুম শুরু হচ্ছে দেরিতে। ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে চা পাতা তোলা শুরু হবে ডুয়ার্স-তরাইয়ে।

Advertisement
অনির্বাণ রায়
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৯
চলছে পাতা তোলার কাজ।

চলছে পাতা তোলার কাজ। —ফাইল চিত্র।

চা গাছে কুঁড়ি এসেছে, কোথাও কোথাও পাতাও বেরিয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি নেই। চা বাগানের প্রচলিত কথা হল— ‘সরস্বতী পুজোর আগে এক দু’পশলা বৃষ্টি হলে পাতায় লক্ষ্মীলাভ হয়।’ কিন্তু বসন্ত দোরগোরায় চলে এলেও, চা বলয় বৃষ্টি পায়নি এ বছর। কাজেই আবহাওয়ার খামখেয়াল এ বারও প্রথম ফ্লাশে বিপর্যয় ডেকে আনবে কিনা, সেই আশঙ্কায় রয়েছে উত্তরবঙ্গের চা বলয়।

Advertisement

চা পর্ষদের নির্দেশে গত মরসুম শেষ হয়েছিল জলদি। এ বারে মরসুম শুরু হচ্ছে দেরিতে। ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে চা পাতা তোলা শুরু হবে ডুয়ার্স-তরাইয়ে। দার্জিলিঙে চা পাতা তোলা শুরু হবে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। সে সময়ে গাছে পাতা চলে আসবে, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই চা বলয়ের। কিন্তু সেই চা পাতার গুণমান কেমন হবে, পাতার পরিমাণই বা কতটা হবে, সেই উদ্বেগে রয়েছে চা বলয়। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কেন্দ্র-রাজ্য বাজেট ঘোষণা হবে। চা বলয়ে আবহাওয়ার খামখেয়ালের ক্ষতিপূরণের উপায় বা মোকাবিলা করার কৌশলে সাহায্য করার কোনও ঘোষণা বাজেটে থাকুক, এমনই চাইছে চা শিল্প।

শীতের সুখা মরসুমে পাতা তোলা বন্ধ হয়েছে গত ৩০ নভেম্বর। তার পর থেকে চা বলয়ে বৃষ্টি হয়নি। শীতের বিদায়বেলায় এবং বসন্ত আসার পর পরই চা গাছে বৃষ্টির প্রয়োজন। প্রথমে বৃষ্টি, তার কিছু দিন পর থেকে উষ্ণ হাওয়া চা পাতাকে ‘ডাঁটো’ করে তোলে। চা পাতার বৃদ্ধি থেকে ভিতরে রস সঞ্চার— দুইয়ের জন্যই বৃষ্টি চাই। তাতেই প্রথম ফ্লাশের চা পাতার স্বাদ, গন্ধ নির্ভর করে।

আবহাওয়া দফতরও চা শিল্পকে ‘সুখবর’ শোনাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের উত্তরবঙ্গের মুখপাত্র গোপীনাথ রাহা বলেন, “শীতকালে বৃষ্টি নির্ভর করে দু’টি বিষয়ে— শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝা তৈরি হতে হবে এবং সেই ঝঞ্ঝা দক্ষিণে নেমে আসতে হবে। বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার ভোরে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, নয়তো আগামী কিছু দিনে বৃষ্টি নেই।” ডুয়ার্সের বেশ কিছু বাগানে পাতা চলে এসেছে। সে পাতা ছেঁটেও ফেলতে হয়েছে। কিন্তু সেই পাতার গুণমান ভাল নয়। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান চিন্ময় ধর বলেন, “একবার তো পাতা ছেঁটে ফেলে দিতে হল বেশ কিছু বাগানে। যাই হোক বৃষ্টি খুব প্রয়োজন।” ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “জলপাইগুড়ি এবং তরাইয়ের বাগানগুলিতে গাছে কুঁড়ি আসতে শুরু করেছে। এখন বৃষ্টি না হলে প্রথম ফ্লাশে গত বারের মতো বিপর্যয় হতে পারে।”

Advertisement
আরও পড়ুন