Baguiati double murder

নিউটাউনের এক গেস্ট হাউসে সিআইডি, বাগুইআটি থানায় ফরেন্সিক দল, জোড়া খুনের তদন্ত চলছে জোরকদমে

বাগুইআটির দুই ছাত্রের খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। সকালে বাগুইআটি থানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করেই শুরু হয় পর পর অভিযান। প্রথমেই নিউটাউনের একটি অতিথিশালায় এসে হাজির হন গোয়েন্দারা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:০৯
বাগুইআটি থানায় নমুনা সংগ্রহে ব্যস্ত সিআইডি-র ফরেন্সিক দল। বৃহস্পতিবার।

বাগুইআটি থানায় নমুনা সংগ্রহে ব্যস্ত সিআইডি-র ফরেন্সিক দল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

এক মুহূর্ত সময় নষ্ট নয়— বাগুইআটির জোড়া খুনের তদন্তে নামা সিআইডি গোয়েন্দাদের তৎপরতা দেখে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অন্তত তেমনই মনে হচ্ছে। বুধবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনার তদন্তে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ধমক দিয়েছিলেন। তার পরই জোড়া খুনের তদন্ত ভার নেয় সিআইডি। বৃহস্পতি বার সকালেই সিআইডির গোয়েন্দারা পৌঁছে যান নিউটাউনের একটি অতিথিশালায়। সূত্রের খবর এই খানেই দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অতনু এবং অভিষেককে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন সত্যেন্দ্র চৌধুরি নামে তাঁদের এক পরিচিত। অর্থাৎ তদন্তে নেমেই প্রথমে অপরাধের আঁতুরঘরে পৌঁছেছে সিআইডি।

গত ২২ অগস্ট হিন্দু বিদ্যাপীঠ স্কুলের দুই ছাত্র অতনু এবং অভিষেককে একটি গাড়িতে করে নিউটাউনেরই একটি গাড়ির শোরুমে নিয়ে এসেছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ওই গাড়িতেই খুন করা হয়েছিল অতনু এবং অভিষেককে। পরে তাদের দেহ ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় রাস্তার ধারের নয়ানজুলিতে। বৃহস্পতিবার এক দিকে যখন সিআইডির একটি দল নিউটাউনে সেই ঘটনা প্রবাহের প্রথম দিকের সুতো জোড়ার চেষ্টা করছেন, তখন সিআইডিরই আর একটি ফরন্সিক দল পৌঁছে যায় বাগুইআটি থানায়। সেখানে অতনু এবং অভিষেককে খুনে ব্যবহৃত গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করে রেখেছিল পুলিশ। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সিআইডির ফরেন্সিকের সদস্যরা ওই গাড়িটি থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে বাগুইআটি থানা থেকেই শুরু হয় সিআইডির অভিযান। সেখানে প্রথমেই তাঁরা জোড়াখুনের তদন্ত সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেন বলে সূত্রের খবর। পরে সেখান থেকেই যান নিউটাউনের এসএস গেস্ট হাউসে। সূত্রের খবর, ২২ অগস্টের আগে ওই গেস্ট হাউসে ছিলেন জোড়া খুনে অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র এবং তাঁর সঙ্গীরা। সিআইডি নিউটাউনের ওই অতিথিশালার সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করেছে।

উল্লেখ্য, বাগুইআটি থানার পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ করেছিল নিহত দুই ছাত্রের পরিবার। প্রশ্ন উঠেছিল, দুই ছাত্রের নিখোঁজের বিষয়টি জানানোর পরেও কেন পদক্ষেপ করল না পুলিশ। শুধু তাই নয়, মুক্তিপণ চেয়ে এসএমএসের কথা জানিয়ে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেও তদন্তে গড়িমসি কেন, এই প্রশ্নও তোলে নিহতদের পরিবার। পরে মৃতদের দেহ দেখার পরও কেন খুন বলে বুঝতে পারেনি পুলিশ, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

সূত্রের খবর, নবান্নে একটি বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের ‘দায়সারা মনোভাব’ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়ের সামনেই তিনি বুধবার বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকারকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। নবান্ন সূত্রের দাবি, সুপ্রতিমকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন সিআইডির মিসিং স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হল না?’’ বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকেও তিনি স্পষ্ট বলেন, ওই ঘটনার তদন্তে ‘‘অবহেলা হয়েছে।’’ এমনকি, পুলিশের মধ্যে, ‘‘সমন্বয় নেই কেন? কেন এত দায়সারা মনোভাব?’’ তা-ও জানতে চান মমতা। সেই অভিযোগের পরই বুধবার বাগুইআটির আইসি পদ থেকে কল্লোল ঘোষকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় শান্তনু সরকারকে। বৃহস্পতিবার সকালে সিআইডির কর্তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে দেখা যায় শান্তনুকে।

আরও পড়ুন
Advertisement