ওই পুলিশকর্মীরা বর্তমানে কলকাতা পুলিশে কর্মরত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে তদন্তকারীদের নজরে এ বার দুই পুলিশকর্মী। সূত্রের খবর, ওই পুলিশকর্মীরা বর্তমানে কলকাতা পুলিশে কর্মরত। পাসপোর্ট তৈরিতে ভুয়ো নথি জমা দিয়ে আবেদন করা হলেও তা ওই দুই পুলিশকর্মী ঠিক ভাবে যাচাই না করে নিজেদের কাজে গাফিলতি করেছেন বলে অভিযোগ। এমনকি, ওই পুলিশকর্মীদের এক জন অন্য জনের হয়ে কাজ করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।ইতিমধ্যেই এক জনের সঙ্গে তদন্তকারীরা কথা বলেছেন। পাশাপাশি, তাঁদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট নথি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে যে গাফিলতি সামনে এসেছে, তাতে তাঁদের কী ভূমিকা ছিল, তা-ও খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। লালবাজার সূত্রের খবর, শীর্ষ মহলের নির্দেশেই ওই কাজ শুরু হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্তকরছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট।
লালবাজার জানিয়েছে, ওই দু’জন ছাড়াও পুলিশের নজরে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার এক প্রভাবশালীর ভূমিকা। তাঁর সঙ্গে এই ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের মূল মাথার যোগাযোগ রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। উল্লেখ্য, ভুয়ো পাসপোর্টের তদন্তে নেমে পুলিশ এখনও পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। যার মধ্যে দু’জন ডাকঘরের কর্মী। তাদের নাম তারকনাথ সেন এবং দীপক মণ্ডল। এ ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে এই চক্রের অন্যতম দুই মাথা, সমরেশ বিশ্বাস এবং মনোজ গুপ্তকে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে মোক্তার আলম এবং দীপঙ্কর দাস নামে দু’জন এবং সমরেশের ছেলে রিপনও।
কী ভাবে কাজ করত ওই ভুয়ো পাসপোর্ট চক্র?
তদন্তকারীরা জানান, ওই প্রভাবশালীর ব্যবসা রয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকায়। তাঁর কাজ ছিল বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের এ দেশে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া। এর পরে ওই বাংলাদেশিদের ছবি-সহ বিভিন্ন তথ্য ভুয়ো পরিচয়পত্র বানানোর জন্য তুলে দেওয়া হত মনোজ গুপ্তর হাতে। তার পরে দীপঙ্কর, সমরেশ, তারকের মাধ্যমে ভুয়ো পরিচয়পত্র বানানো ও পাসপোর্টের আবেদনের কাজ হত। অভিযোগ, ওই পুলিশকর্মীরা কিছু যাচাই না করেই আবেদন পাস করিয়ে দিতেন। পাসপোর্ট তৈরি হয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে চলে যেত পঞ্চসায়রের ডাকঘরে। সেখানে অস্থায়ী কর্মী দীপক তা তুলে নিয়ে পৌঁছে দিত সমরেশের কাছে। গত দু’বছরে ওই চক্র ৭৩টি ভুয়ো পাসপোর্ট বানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আর কারা এই চক্রে জড়িত, সেই খোঁজ চলছে।