Advertisement Banners

সময়সীমা প্রায় শেষ, এখনও সরেনি বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং

শহর কলকাতার সৌন্দর্যহানি ও দৃশ্যদূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যত্রতত্র বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং ও ব্যানার। গত বছর পর্যন্ত পুজো উপলক্ষে লাগানো ওই সব বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না।

Advertisement
মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:০৯
পুজো শেষ। তার পরেও রাস্তার পাশে লাগানো বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং খোলা হয়নি। বুধবার, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে।

পুজো শেষ। তার পরেও রাস্তার পাশে লাগানো বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং খোলা হয়নি। বুধবার, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

কলকাতা পুরসভার সঙ্গে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রতিনিধিদের প্রাক্‌-পুজোর বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, লক্ষ্মীপুজোর পরের দিনের মধ্যে শহরের সমস্ত পুজোর ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলতে হবে। কিন্তু বুধবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঢুঁ মেরে দেখা গেল, এখনও অনেক জায়গাতেই পুজোর বিজ্ঞাপন-সহ ব্যানার, হোর্ডিং স্বমহিমায় বিদ্যমান। শহরে দুর্গাপুজোর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার বসানোর কাজ করে প্রায় ১০০টি সংস্থা। ওই সমস্ত সংস্থাগুলির মধ্যে কয়েকটির প্রতিনিধি স্বীকার করে নিচ্ছেন যে, আজ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে শহরের সমস্ত জায়গা থেকে বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলা অসম্ভব। এর জন্য অন্তত আরও ৩-৪ দিন সময় লাগবে।

Advertisement

শহর কলকাতার সৌন্দর্যহানি ও দৃশ্যদূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যত্রতত্র বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং ও ব্যানার। গত বছর পর্যন্ত পুজো উপলক্ষে লাগানো ওই সব বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা ছিল না। ফলে পুজোর পরে বহু দিন পর্যন্ত দৃশ্যদূষণ চলতেই থাকত। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুজো মিটে গেলেই বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার যত দ্রুত খুলে ফেলা যায়, ততই মঙ্গল। কারণ, এগুলি যে শুধু দৃশ্যদূষণ করে তা-ই নয়, ঝড়বৃষ্টি বা অন্য কোনও কারণে উপর থেকে পড়ে গিয়েও বড়সড় বিপদের কারণ হতে পারে। তার জন্য এ বার পুজোর আগেই প্রস্তুতি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, লক্ষ্মীপুজোর পরের দিনের মধ্যে শহর জুড়ে সমস্ত বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলতে হবে।’’ কিন্তু বুধবার শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে গিয়ে দেখা গেল, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই কাজ পুরোপুরি শেষ করা কার্যত অসম্ভব। অনেক জায়গায় বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার খোলার কাজ চললেও এখনও বেশ কিছু জায়গায় সেই কাজ বাকি রয়েছে। যদিও কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার পরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খোলার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, বাকিগুলির কাজ দ্রুত শেষ হবে।’’

পুজো উপলক্ষে বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার বসানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সংস্থার কর্ণধার রাজেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘রাসবিহারী, চেতলা, বেহালা, পর্ণশ্রী, শ্যামবাজার ইত্যাদি জায়গায় অধিকাংশ ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলা হয়েছে। বাকিগুলো খুলতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে।’’ পুজোয় দায়িত্বপ্রাপ্ত আর এক বিজ্ঞাপনী সংস্থার কর্ণধার রাতুল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজো মিটে যাওয়ার পরে পরেই আমরা শহরের বিভিন্ন স্থানে লাগানো বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খুলে ফেলার কাজ শুরু করেছি। তবে সেই কাজ শেষ হতে আরও দিন চারেক লাগবে।’’

তবে পুর বিজ্ঞাপন দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, পুজোর ছুটির পরে শনিবার পুরসভা খুলবে। তখনও যদি দেখা যায় রাস্তার দু’ধারে বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার একই ভাবে রয়ে গিয়েছে, তা হলে সেই সব হোর্ডিং-ব্যানার নামাতে পুরসভার তরফে অভিযান চালানো হবে। একই সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাদের নোটিস দেওয়া হবে। পুর বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজো উপলক্ষে এমনিতেই বিজ্ঞাপন বাবদ পুরসভা কোনও করের টাকা পায় না। তার উপরে পুরসভার নিজের লোকবল দিয়ে বিজ্ঞাপনী ব্যানার, হোর্ডিং খুলতে বাড়তি টাকা খরচ হবে।’’ অভিযোগ, দুর্গাপুজোয় লাগানো এই সব বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং, ব্যানার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কালীপুজো পর্যন্ত যথাস্থানে রয়ে যায়। এই প্রবণতা রুখতে গত বছর মেয়র ফিরহাদ হাকিমআধিকারিকদের কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার পরে পরেই শহরের সব প্রান্ত থেকে ওই সব হোর্ডিং, ব্যানার খুলে ফেলতে হবে। সেই মতোই জানানো হয়েছিল বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলিকে।

আরও পড়ুন
Advertisement