Electrocution in Kolkata

জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া ঠেকাতে বর্ষায় বন্ধ ত্রিফলা আলো, সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার

রবিবার একবালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। ভেজা কাপড় মেলতে গিয়ে খোলা তারে হাত লাগাতেই এক জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৭:১৫
An image of the electrical wires

বাতিস্তম্ভ ছুঁয়ে অঘটন ঠেকাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে। ফাইল চিত্র।

২০২২ সালের ২৬ জুন। হরিদেবপুরে জমা জলে গর্তের মধ্যে পড়ে গিয়ে এক কিশোরের হাত ছুঁয়ে গিয়েছিল পুরসভার একটি বাতিস্তম্ভে। সেখানেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ওই কিশোরের। গত বছরে জমা জলের মধ্যে বাতিস্তম্ভ স্পর্শ করায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে পুরসভার আলো বিভাগ এ বার একাধিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী রবিবার বলেন, ‘‘বর্ষার সময়ে সমস্ত ত্রিফলা আলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে। বাতিস্তম্ভ ছুঁয়ে অঘটন ঠেকাতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে। সব ওয়ার্ডে অটোয় করে শীঘ্রই শুরু করা হবে প্রচার। বাসিন্দাদের বলব, বাতিস্তম্ভে খোলা তার বা অন্য খামতি দেখলেই পুরসভাকে ৮৩৩৫৯৯৯১১১ নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ করে ছবি পাঠান। শীঘ্র ব্যবস্থা নেবে পুর প্রশাসন।’’

রবিবার একবালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। ভেজা কাপড় মেলতে গিয়ে খোলা তারে হাত লাগাতেই প্রথমে এক জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় দু’জনের। সামনেই আসছে বর্ষা। রবিবারের ঘটনা উসকে দিচ্ছে গত বছরে বর্ষার মরসুমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার স্মৃতি। যদিও এ দিন জমা জলের কোনও রকম বিষয় ছিল না। এ দিন একবালপুরে গিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম সিইএসসি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা রুখতে সিইএসসিকে কঠোর হতে বলেন তিনি। বর্ষা এসে যাওয়ার কথা আগামী মাসেই। তার আগে, আগামী ১৭ মে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে কলকাতা পুর ভবনে প্রাক্‌ বর্ষার প্রস্তুতি বৈঠক করবেন মেয়র।

Advertisement

মেয়র পারিষদ (আলো) জানান, গত বছরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনাগুলির পরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ একাধিক পরামর্শ দিয়েছিল। বাতিস্তম্ভে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা ঠেকাতে তাদের পরামর্শ ছিল, বাতিস্তম্ভে আর্থিং আছে কি না, তা আর্থ মেগার যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করা সম্ভব। সেই মতো পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য একটি করে আর্থ মেগার যন্ত্র কেনা হয়েছে। মেয়র পারিষদ জানান, এখন বিদ্যুৎ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা ওই যন্ত্রের সাহায্যে বাতিস্তম্ভগুলি পরীক্ষা করে দেখছেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা এড়াতে তাঁদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারেরা বাতিস্তম্ভ ঘুরে দেখে কোথাও খামতি চোখে পড়লে অবিলম্বে মেরামতির ব্যবস্থা করবেন। এ ছাড়া, বর্ষার সময়ে প্রতিটি বাতিস্তম্ভে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নাগরিকদের কাছে আমাদের আবেদন, বাতিস্তম্ভে কোথাও খোলা তার চোখে পড়লে তৎক্ষণাৎ পুরসভার নম্বরে ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ করে দিন। আমরা যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নেব।’’

গত বছরে হরিদেবপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় এক সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এই বছর মেয়র পারিষদের হুঁশিয়ারি, বাতিস্তম্ভে নজরদারির দায়িত্ব এড়ালে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement