(বাঁ দিকে) কসবাকাণ্ডে স্কুটারে চেপে আসেন দুই আততায়ী এবং সুশান্ত ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কসবার তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলা চালাতে আততায়ীরা যে স্কুটারে চেপে এসেছিলেন, সেই স্কুটারের খোঁজ পেল পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে বন্ডেলগেট এলাকা থেকে একটি পরিত্যক্ত স্কুটার পাওয়া গিয়েছে। অনুমান, সেই স্কুটারই ব্যবহার হয়েছিল কসবাকাণ্ডে।
কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত। শুক্রবার তাঁকে খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সুশান্তকে মারতে স্কুটারে করে দু’জন দুষ্কৃতী তাঁর বাড়ির সামনে গিয়েছিলেন। স্কুটারের পিছন থেকে এক জন নেমে পিস্তল তুলে ধরেন কাউন্সিলরকে লক্ষ্য করে। পিস্তল কাজ না করায় হামলার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে পালানোর সময় যুবরাজ সিংহ নামে এক জনকে ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। তবে স্কুটার নিয়ে পালান অন্য এক জন। ঘটনার চার দিন পর সেই স্কুটারের খোঁজ মিলল।
তদন্তকারী সূত্রে খবর, কসবাকাণ্ডে ধৃত মূল অভিযুক্ত আফরোজ় খান ওরফে গুলজ়ারকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই হানা দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বন্ডেলগেটের কাছে ধর্মতলা রোডের একটি সরু গলি থেকে স্কুটারটি উদ্ধার করা হয়। সেই স্কুটারটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে এখনও অধরা স্কুটারচালক। শুধু তা-ই নয়, তাঁর সঙ্গে থাকা একটি পিস্তলেরও খোঁজ মেলেনি। ওই পিস্তল খুঁজতে রবিবার সুশান্তের বাড়ির কাছের একটি খালে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। যদিও কোনও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।
সুশান্তের বাড়ির সামনে লাগানো সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল ঘটনার মুহূর্তের দৃশ্য। সেখান থেকেই মিলেছিল স্কুটারের নম্বর। যদিও সেই নম্বর খতিয়ে দেখেও কোনও লাভ হয়নি। ওই নম্বরের কোনও স্কুটারের হদিস মেলেনি। গুলজ়ারকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, সপ্তাহখানেক আগেই এক ব্যক্তির থেকে স্কুটারটি কিনেছিলেন তিনি। এই স্কুটারের নম্বর দেখে যাতে মালিকের খোঁজ কেউ করতে না পারেন, সে কারণে নম্বরপ্লেট পাল্টে ফেলেছিলেন গুলজ়ার। ব্যবহার করা হয়েছিল অন্য এক নম্বরপ্লেট।
উল্লেখ্য, সুশান্তকে গুলি করে খুন করার জন্য তিন বন্দুকবাজকে ঠিক করা হয়েছিল। শুক্রবার হামলার আগে পার্ক সার্কাস এলাকায় আসেন ওই তিন জন। সেখানেই বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন আফরোজ়। ওই বাইকে চেপেই চার জন রওনা দেন কসবার দিকে। তবে মাঝে একটি ট্র্যাফিক সিগন্যালে বাইক দাঁড় করান আফরোজ়। সেখানেই নেমে যান যুবরাজ। ট্যাক্সিচালক আহমেদও ছিলেন সেই সিগন্যালে। যুবরাজের জন্য অন্য একটি স্কুটারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই স্কুটারে চেপেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন যুবরাজ। পলাতক স্কুটারচালকের খোঁজ চলছে।