Price Hike

এত দাম, খাব কী? ক্রেতার ‘কান্না’য় কলকাতার তিন বাজারে টাস্ক ফোর্স হানা, কী দেখল, কী আভাস দিল

পাইকারি এবং খুচরো বাজারে সব্জির দামের ফারাক চোখে পড়ার মতো। দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। সেই আবহেই বাজারে বাজারে হানা দিল টাস্ক ফোর্স।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৫২
Task force raid several market of Kolkata and reviewed price hike of vegetables

মানিকতলা বাজারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছেন টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে। —নিজস্ব চিত্র।

বাজারে গেলে পেঁয়াজের দামে ছেঁকা খাচ্ছে আমজনতা। শুধু পেঁয়াজ নয়, আলুর দামও ঊর্ধ্বমুখী। ক্রেতাদের মুখে একটাই কথা, ‘‘আলু-পেঁয়াজ থেকে সব্জি— বাজার আগুন! খাব কী?’’ পাইকারি এবং খুচরো বাজারে সব্জির দামের ফারাক চোখে পড়ার মতো, যা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে টাস্ক ফোর্সের ভূমিকা নিয়েও। মঙ্গলবার কলকাতার বেশ কয়েকটি বাজারে হানা দিয়েও ধরপাকড়ের পথে হাঁটেনি টাস্ক ফোর্স। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ‘সন্তুষ্ট’ই তারা!

Advertisement

রবীন্দ্রনাথ কোলের নেতৃত্বে মঙ্গলবার টাস্ক ফোর্স শহরের তিনটি বাজারে হানা দেয়। মানিকতলা, বাগমারি এবং গুরুদাস মার্কেট। প্রত্যেকটি বাজারেই সব্জি এবং আনাজের দামে বেশি হেরফের নেই। কোথাও পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে, কোথাও আবার ৭৫। আলুর দাম ঘোরাফেরা করছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরের মধ্যে! অন্য সব্জির দামও আকাশছোঁয়া। তবে কোলে মার্কেটের মতো পাইকারি বাজারে আবার পেঁয়াজের দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। কেন এত ফারাক? রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘যা খবর পেয়েছি, কোলে মার্কেটে সোমবার পেঁয়াজ ঢুকেছে ১৬০০ টাকা প্রতি বস্তা। কিন্তু সেখানে মানিকতলার মতো বাজারের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ কিনছেন ২৭০০ টাকা প্রতি বস্তা। ফলে দামের ফারাক হচ্ছেই।” টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের কথায়, ‘‘আগামী তিন-চার দিনের মধ্যেই দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। সব বাজারেই কম দামে পেঁয়াজ ঢুকবে। ফলে দাম কমবে।’’

শুধু পেঁয়াজ নয়, আলুরও দামও কমবে বলে আশাবাদী রবীন্দ্রনাথ। তাঁর দাবি, ‘‘অনেক বাজারেই এখনও নতুন আলু আসেনি। ব্যবসায়ীরা ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে আলু কিনছেন। তবে আগামী কয়েক দিনে সেই ছবি পাল্টে যাবে।’’ আলু-পেঁয়াজের পাশাপাশি শীতের সব্জির দামেও হাঁসফাঁস অবস্থা ক্রেতাদের। একটি ছোট ফুলকপির দামই ৩০-৩৫ টাকা। যদিও কয়েক দিনের মধ্যে সেই দাম কমবে বলে মনে করছে টাস্ক ফোর্স। রবীন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘এখনও বাজারে শীতের ফসল আসেনি। তিন-চার দিনের মধ্যেই আস্তে আস্তে প্রায় সব বাজারেই শীতের ফসল চলে আসবে। তখন দাম কমবে।’’ আলু-পেঁয়াজের মতো শীতের মরসুমের অন্যান্য সব্জির ক্ষেত্রে পাইকারি দামের সঙ্গে খুব বেশি হেরফের নেই বলে দাবি টাস্ক ফোর্সের।

রাজ্যে পেঁয়াজের জোগান আসে মূলত মহারাষ্ট্রের নাসিক, মধ্যপ্রদেশ থেকে। কৃষি বিপণন দফতর সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বরে অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার ফলে খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘পুজোর সময় দাম বৃদ্ধি পেলেও পরে তা কমে যায়। নাসিক থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হয়। কিন্তু এ বছর এখনও পর্যন্ত সে ভাবে পেঁয়াজ আসেনি। এ বার সেই আমদানি কম হওয়ায়, দাম চড়েছে বেশি।’’ মানিকতলা মার্কেটের ব্যবসায়ী রামচন্দ্র সাউ বলেন, ‘‘আমি যেমন দামে কিনছি তার উপর সামান্য লাভ রেখেই বিক্রি করছি। টাস্ক ফোর্সকেও বলেছি সে কথা।’’

আরও পড়ুন
Advertisement