গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার সঙ্গে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করছে বলে লোকসভায় সরব হলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে মঙ্গলবার প্রশ্ন উত্থাপন করেন তিনি। কল্যাণের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পাল্টা বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে বেনিয়ম, তহবিলের যথেচ্ছ ব্যবহার এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ঘটনাচক্রে, শিবরাজের পূর্বসূরি গিরিরাজ সিংহও একই সুরে আগে এই অভিযোগ তুলেছিলেন বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে।
লোকসভায় মঙ্গলবার কল্যাণ বলেন, ‘‘রেগার আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজ দিতে বাধ্য। এটা কারও পছন্দ-অপছন্দের বিষয় নয়।’’ এর পরেই কল্যাণ অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার সঙ্গে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করছে। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে তৃণমূলের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ নতুন নয়। এই বিষয়কে হাতিয়ার করেই গত বছর অক্টোবর মাসে দিল্লিতে কৃষি ভবনে অভিযান করে তৃণমূল। যার নেতৃত্বে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে অবশ্য কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন গিরিরাজ। তার পরে ২০২৪ সালের লোকসভাতেও ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ তুলে ভোটের প্রচার করেছিল তৃণমূল।
যদিও ইতিমধ্যেই ১০০ দিনের কাজের রাজ্যের ৫৯ লক্ষ শ্রমিককে তাঁদের বকেয়া টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। লোকসভায় কল্যাণের অভিযোগকে খণ্ডন করতে আগ্রাসী হয়েই জবাব দেন শিবরাজ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর স্লোগান ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’। বাংলায় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিস্তর অমিয়ম হয়েছে। এই তহবিলের টাকা অন্য খাতে খরচ করা হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে, আর সরকার অভিযুক্তদের আড়াল করেছে। প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়াও হয়েছে। এই সবই হয়েছে বাংলায়। আমরা জনতার টাকা কাউকে খেতে দিতে পারি না।’’
তৃণমূলের দাবি, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে বিজেপি বাংলায় হারার পর থেকেই ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করেছে। বাংলার শাসকদলের বক্তব্য, ভোটে জিততে না-পেরে বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চাইছে বিজেপি। সংসদে যখন কল্যাণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে, তখন পাল্টা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুললেন মোদীর মন্ত্রী শিবরাজ।