Calcutta High Court

‘মেডেল পাওয়ার মতো তদন্ত করছে পুলিশ’! খুনের মামলায় কমিশনারকে ডেকে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের

বাড়িভাড়া চাওয়া নিয়ে অশান্তির জেরে টিটাগড়ের এক বাসিন্দাকে খুনের অভিযোগ ওঠে। তাঁকে ছাদ থেকে ফেলে পিটিয়ে মারার অভিযোগ দায়ের হয়। সেই সংক্রান্ত মামলারই শুনানি ছিল হাই কোর্টে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:১৫

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

ভাড়া চাওয়ায় বাড়ির ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তার পর পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল এক বাড়িওয়ালাকে। বুধবার সেই সংক্রান্ত মামলায় পুলিশের তদন্তের তীব্র কটাক্ষ করল কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করেনি জানিয়ে বিচারপতি বললেন, ‘‘পুলিশ যে ভাবে তদন্ত করেছে, তাতে তাদের প্রত্যেককে মেডেল দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা উচিত।’’

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছিল ব্যারাকপুরে। এ ব্যাপারে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে ভর্ৎসনা করছিল আদালত। বুধবার সেই সময়ে রাজ্যের আইনজীবী সাফাই দিতে এলে তাকেও ভরা আদালতে হুঁশিয়ার করেছেন বিচারপতি। রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘কোনও সাফাই দেবেন না। আজ কমিশনার হাজিরা দিয়েছেন। আর একটা কথা বললে আগামিকাল রাজ্যের ডিজিকে হাজিরার নির্দেশ দেব।’’

ঘটনার সূত্রপাত গত বছর জুন মাসে। বাড়িভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে খুন হন টিটাগড়ের বাসিন্দা গোবিন্দ যাদব। ভাড়াটে-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে তাঁকে ছাদ থেকে ফেলে, তার পরে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় পুলিশ সরাসরি খুনের ধারা যুক্ত না করে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। বুধবার সেই সংক্রান্ত মামলাতেই হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ভর্ৎসনা করেন পুলিশকে।

বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দেওয়া হল, তার পর ফের তাকে নীচে এসে পেটানো হল। এর পরেও পুলিশ খুনের ধারা যুক্ত করার মতো অপরাধ খুঁজেই পেল না। এই তো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবস্থা। মৃত্যুর এমন তদন্ত করেছেন যে মেডেলের জন্য সুপারিশ করা উচিত।’’

বুধবার এই মামলায় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কমিশনার অলোক রাজোরিয়াকে তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ডেকে পাঠানো হয়েছিল তদন্তকারী অফিসারকেও। মামলাটি শুনানি হয় বিচারপতি বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই টিটাগড়ের ঘটনার গুরত্ব স্পষ্ট করে বেঞ্চ বলে, ‘‘এই ঘটনায় সবাইকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন ছিল। পুলিশ যা করতে পারেনি। এই মামলায় সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।’’

প্রসঙ্গত, গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাসে হওয়া এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। সেই মামলাতেই পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। এ ব্যাপারে রাজ্য জানিয়েছিল, খুনের ধারা যুক্ত করার আবেদন নিম্ন আদালতে জানাতে চলেছে। তার পরও মঙ্গলবার ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কমিশনার রাজোরিয়া এবং তদন্তকারী আধিকারিককে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি বসাক। বুধবার আদালতের নির্দেশেই তাঁরা হাজির হয়েছিলেন। বিচারপতি তাঁদের দু’জনকেই ভর্ৎসনা করেন।

Advertisement
আরও পড়ুন