বিচারপতি অমৃতা সিংহ। — ফাইল ছবি।
ভাঙড়ে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর যে ৮২ জন প্রার্থীর নাম ওয়েবসাইট থেকে মুছে গিয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের অভিযোগ আলাদা করে খতিয়ে দেখতে হবে। তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। এই পদক্ষেপ করতে হবে ২৮ জুনের মধ্যে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘এ ভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোনও আসনে নির্বাচন হতে পারে না।’’
ভাঙড়ে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তারা সব আসনে মনোনয়ন জমা করতে পারেনি। আইএসএফ প্রার্থীদের দাবি, অশান্তির পরেও কিছু আসনে মনোনয়নপত্র জমা করতে পেরেছিলেন তাঁরা। স্ক্রুটিনির পরেও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম ছিল বলে দাবি। এমনকি, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন অর্থাৎ ২০ জুন সকালেও কমিশনের ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম ছিল বলে দাবি আইএসএফের। কিন্তু সেই রাত থেকে ওয়েবসাইটে তাঁরা আর নাম দেখতে পাননি বলে অভিযোগ। এর ফলে ওই সব আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থী। গত বুধবার মামলার শুনানি হয়েছিল হাই কোর্টে। এই প্রসঙ্গেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে ভাঙড়ে অশান্তি, বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়া এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করার কথাও শুনানিতে টেনে আনেন মামলকারীরা। সে প্রসঙ্গেই বিচারপতি সিংহ বুধবার মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘একটি নির্বাচন ঘিরে এত অভিযোগ। এটা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার! রাজ্যের উচিত, আদালতের নির্দেশ মতো আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। তা না হলে বা অশান্তি, রক্তপাত, জীবনহানি হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’’ কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, মনোনয়ন পর্ব এবং স্ক্রুটিনি শেষ হয়েছে। এই অবস্থায় মামলাটি গ্রহণ করা উচিত নয় আদালতের। বৃহস্পতিবার বিচারপতি সিংহ পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, রাজ্যে নির্বাচন কি চলছে? কমিশনার কি তাঁর পদে রয়েছেন?
সোমবার ওই মামলাতেই বিচারপতি সিংহের নির্দেশ, ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থীর প্রত্যেকের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে হবে। খতিয়ে দেখতে হবে, ওয়েবসাইট থেকে তাঁদের নাম বাদ গেল কী ভাবে। কারও অভিযোগ সত্য হলে, তাঁকে ভোটে লড়ার সুযোগ করে দিতে হবে কমিশনকে। ২৮ জুনের মধ্যে এই সুযোগ করে দিতে হবে বলেই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।