বিচারপতি অমৃতা সিংহ। — ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় আরও সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে জানাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় সংস্থার ওই দাবি শুনে বিচারপতি অমৃতা সিংহ কার্যত ভর্ৎসনা করলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। প্রশ্ন তুললেন প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত তদন্তের ‘শ্লথতা’ নিয়ে।
ইডির আইনজীবীকে বিচারপতির নির্দেশ, মামলার পরবর্তী শুনানিতে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করতে হবে। আগামী ১২ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। কলকাতা হাই কোর্টে মঙ্গলবারের শুনানিপর্বে ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী জানান, আরও কিছু সম্পত্তি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তখনই ইডির উদ্দেশে বিচারপতি সিংহ প্রশ্ন করেন, ‘‘সম্পত্তি চিহ্নিত করা হয়ে থাকলে এত সময় লাগছে কেন?’’
জবাবে ইডির আইনজীবী জানান, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরুর সঙ্গে অপরাধও নিশ্চিত করা হচ্ছে। তারই মধ্যে আরও সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। এক অভিযুক্তের কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। দিল্লি থেকে তা এখনও আসেনি। তা এলে তদন্তে আরও অগ্রগতি হবে।
বিচারপতি সিনহার তখন বলেন, ‘‘এ ভাবে সময় চলে গেলে প্রত্যেকে তদন্তের বাইরে চলে যাবে। তখন আর কিছু পাবেন না। এত দিনের সব পদক্ষেপ কাজে আসবে না। আর কত দিন লাগবে?’’ আইনজীবী ত্রিবেদী বলেন, ‘‘প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা মামলায় জড়িয়ে পড়ছি। যে কোনও নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে।’’
বিচারপতি সিংহ আবার প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা কি মনে করছেন এটা ‘কেক ওয়াক’ (খুব সহজ)? অপরাধ যত সামনে আসবে এই ধরনের মামলায় চাপ আরও বাড়বে।’’ ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘আমরা সেটা জানি। তাই আমরা নখ, দাঁত বার করে লড়াই করছি। সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে সুপ্রিম কোর্ট সব কোর্টে লড়াই করছি। পরবর্তী শুনানির দিন আমার বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে পারব।’’ বিচারপতির নির্দেশ, পরের শুনানিতে রিপোর্ট দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগের মামলার তদন্ত ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করতে বলেছিল আদালত। ৩১ ডিসেম্বর সেই সময়সীমা পার হয়ে গেলেও ইডি হাই কোর্টকে জানিয়েছিল, অনেক তথ্য হাতে এসে যাওয়ায় এখনও তদন্ত শেষ করা যায়নি। বিচারপতি সিংহের কাছে আরও কিছুটা সময় চেয়েছিলেন ইডির আইনজীবী। এ বার ইডির তরফে সামনে আনা হল ‘আরও সম্পত্তির সন্ধান মেলার ‘তত্ত্ব’।