(বাঁ দিকে) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং (ডান দিকে) প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। ফাইল ছবি।
জরুরি তলব পেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে এলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তাঁকে আদালতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবারই দুপুর ৩টের মধ্যেই তাঁকে বিচারপতির এজলাসে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। সেই নির্দেশ পালন করে যথাসময়ে হাই কোর্টে এসে হাজির হলেন গৌতম। আদালত সূত্রে খবর, টেট সংক্রান্ত একটি জরুরি মামলার বিষয়েই তলব করা হয়েছে গৌতমকে।
দিন কয়েক আগেই ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘিরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন গৌতম। ওই মামলা প্রথমে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। পরে ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বহাল রাখলে আবার এই মামলা সুপ্রিম কোর্টে যায়। সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ নিয়ে কিছু না বললেও ডিভিশন বেঞ্চের রায় খারিজ করে দেয়। সেই ঘটনার পর এ বার মুখোমুখি সাক্ষাৎ হল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং পর্ষদ সভাপতির।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাস আগের একটি মামলার সূত্রেই এই তলব। ওই মামলায় ২০২০ সালে টেট পরীক্ষা দেওয়া এক চাকরিপ্রার্থীকে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য ডাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে দেওয়া হয়েছিল ওই নির্দেশ। কিন্তু ওই চাকরিপ্রার্থীর আইনজীবী আদালতে সম্প্রতি জানান, এক মাস কেটে গেলেও ওই চাকরিপ্রার্থীকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডেকে পাঠায়নি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
মামলাটি শুনানির জন্য সোমবার ওঠে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে। চাকরিপ্রার্থীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের বক্তব্য শোনার পর আদালত পর্ষদের আইনজীবীর কাছেও পর্ষদের অবস্থান জানতে চান। জবাবে তিনি বলেন, পর্ষদ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে। বিষয়টি বিচারাধীন বলে এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা যদিও এর পর থেমে থাকেনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘ডিভিশন বেঞ্চে যে মামলা হয়েছে, তার নম্বর দিন। আমি নির্দেশনামায় উল্লেখ করব।’’ এর জবাবে পর্ষদের আইনজীবী উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন ওই মামলার নম্বর তাঁর জানা নেই। পর্ষদের এই জবাব শোনার পরই বিচারপতি পর্ষদ সভাপতিকে তলব করেন। চাকরিপ্রার্থীর আইনজীবী জানিয়েছেন, মামলাটি সত্যিই ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ নিরসন করতেই পর্ষদ সভাপতিকে আজ বিকেল ৩টের মধ্যে হাজিরা দিতে বলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।