(বাঁ দিকে) সল্টলেকের ধর্নামঞ্চে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। বন্যায় বিধ্বস্ত জনজীবন (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর-সহ রাজ্যের তিনটি মেডিক্যাল কলেজের দল যাচ্ছে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে। জল, ওষুধ, শুকনো খাবার নিয়ে তৈরি জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের দল শুক্রবারই বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে রওনা দেবে। বন্যাকবলিত এলাকায় ক্যাম্প করবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। দুর্গতদের পরিষেবা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্নামঞ্চ থেকেই সেই ঘোষণা করা হয়েছিল।
শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় আরজি কর ছাড়াও যাচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে একটি করে দল। পানীয় জল, শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ত্রিপল এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, এই কঠিন সময়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে, তাঁদের পরিষেবা দিতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। একটি বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, ‘‘যাঁরা আমাদের পাশে থেকেছেন, এই কঠিন সময়ে তাঁদের পাশে থাকা জরুরি। ডাক্তার হিসাবে ওঁদের সাহায্য করাই আমাদের কর্তব্য। নির্যাতিতা থাকলে তিনিও এই কাজই করতেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে একসঙ্গে কাজ করে আমরা পরিবর্তন নিয়ে আসব।’’
উল্লেখ্য, গত অগস্টে আরজি কর হাসপাতাল থেকে এক কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর পর থেকেই আরজি কর-সহ রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। বিচারের দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে তাঁরা ৪২ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করেছেন। এক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এবং এক বার মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে তাঁরা বৈঠকও করেছেন বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে। আরজি কর মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে চিঠি দেন। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বদল আনতে নির্দেশিকা জারি করা হয়। এই নির্দেশিকার পর সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তারেরা জানান, তাঁরা শুক্রবার থেকে অবস্থান তুলে নেবেন। আংশিক কর্মবিরতি চলবে। জরুরি পরিষেবায় তাঁরা শনিবার থেকে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকাগুলিতে জুনিয়র ডাক্তারেরা ক্যাম্প করবেন বলেও জানান। শুক্রবার সকালেই তাঁদের দল রওনা দিচ্ছে।