Jalpaiguri

ঝড়ে দুলছে মণ্ডপ, দুলছে দুর্গাপ্রতিমা, দৌড়ে এসে বাঁচালেন জলপাইগুড়ির আমির, জসিরুদ্দিনরা

জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি পুরসভার ঘটনা। সেখানে মহিলা পরিচালিত দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপে সোমবার সকালে যখন অষ্টমীর অঞ্জলি চলছিল, তখন আচমকা ঝড় ওঠে। মণ্ডপ হেলে যায়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৪৭
সম্প্রীতির পুজো।

সম্প্রীতির পুজো। নিজস্ব চিত্র

আচমকা ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছিল দুর্গাপুজোর মণ্ডপ। অষ্টমীর অঞ্জলিও শিকেয় উঠেছিল। কয়েক জন মুসলমান যুবকের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেল মণ্ডপটি। বাঁচল দুর্গা প্রতিমাও।

জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। সেখানে মহিলা পরিচালিত দুর্গোৎসব কমিটির পুজো মণ্ডপে সোমবার সকালে যখন অষ্টমীর অঞ্জলি চলছিল, তখন আচমকা ঝড় ওঠে। দুলতে শুরু করে মা দুর্গার প্রতিমা। মণ্ডপটিও এক দিকে হেলে যায়। পুজো উদ্যোক্তারা অসহায় হয়ে পড়েন। কী ভাবে তাঁরা সব কিছু সামলাবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। অঞ্জলিও মাঝপথে থমকে যায়।

Advertisement

দুর্গাপুজোর মণ্ডপে এই পরিস্থিতি দেখে ঝড়ের মাঝেই ছুটে আসেন চার মুসলমান ব্যবসায়ী। তাঁদের নাম আমির হোসেন, মোহম্মদ জসিরুদ্দিন, মন্টু হোসেন এবং মোবারক আলি। ওই পুজো মণ্ডপের কাছেই ছিলেন তাঁরা। এক জন মা দুর্গার প্রতিমা দড়ি দিয়ে বেঁধে শক্ত করে ধরে রাখেন। বাকি তিন জন সেই দুলতে থাকা মণ্ডপের খুঁটি আঁকড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন। তাঁদের জন্যই মণ্ডপটি ভেঙে যায়নি, দাবি পুজো-উদ্যোক্তাদের।

মুসলিম যুবকদের কথা বলতে গিয়ে চোখে জল চলে আসে পুজো কমিটির সম্পাদক শম্পা গুপ্তের। তিনি বলেন, ‘‘ঝড়ে যখন আমাদের মণ্ডপ পড়ে যাচ্ছে, মুসলিম ভাইরা এসে তা আঁকড়ে ধরেছিলেন। দৃশ্যটি ভাবলে আমার গায়ে কাঁটা দেয়। ওঁদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। ধর্ম যাই হোক, আমরা সবাই একই ঈশ্বরের সৃষ্টি। আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই।’’

মোহম্মদ জসিরুদ্দিন বলেন, ‘‘ঝড়ে গোটা প্যান্ডেল হেলে গিয়েছিল। আমরা দেখলাম পুজো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবাই মিলে ওখানে গিয়ে আমরা হাত লাগাই।’’

সোমবার সকালের ঝড়ে জলপাইগুড়ির একাধিক পুজো মণ্ডপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। তার মাঝেই মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটির মণ্ডপে দেখা গিয়েছে সম্প্রীতির ছবি। স্থানীয় মুসলমান যুবকদের প্রশংসায় সরব হয়েছেন উদ্যোক্তারা সকলে।

আরও পড়ুন
Advertisement