Rudranil Ghosh

বিজেপি-র সঙ্গে মতে মিলছে বলেই টেলি তারকারা দলে যোগ দিচ্ছেন: রুদ্রনীল

কিছুদিন আগেই বন্ধু, সহকর্মী সোহম চক্রবর্তী খোলাখুলি বলেছেন, আমাকে বয়কট করা উচিত টালিগঞ্জ থেকে। যদিও আমার কোনও রাগ নেই সোহমের প্রতি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১৮
তারকাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে রুদ্রনীল ঘোষের মত প্রকাশ

তারকাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে রুদ্রনীল ঘোষের মত প্রকাশ

মিঠুন চক্রবর্তীর কাছে মোহন ভাগবত। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। দুই তারকার বাড়িতে বিজেপি নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের সরব রুদ্রনীল ঘোষ। নীল বাড়ি দখলে তারকা সংযোগই কি গেরুয়া শিবিরের মূল হাতিয়ার? সাক্ষাৎকারে আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া ‘ভিঞ্চি দা’।

খবর, যশ দাশগুপ্ত যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে?
রুদ্রনীল- আমিও সেরকমই শুনেছি। বুধবারে যশ দাশগুপ্ত যোগদান করছেন বিজেপিতে। একা যশ নন, টলিউডের আরও কিছু তারকা আজ যোগ দিচ্ছেন দলে। (একটু থেমে) খবরের সত্যতা যাচাই না করলেও অবাক হইনি। এটাই হওয়ার ছিল। মানুষ আর কত সহ্য করবে?

Advertisement

মিঠুন চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও কি যোগ দিচ্ছেন? তারই সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার পোস্ট?
রুদ্রনীল- দুই তারকার বাড়িতে দলের দুই নেতার উপস্থিতি দেখে আমার যা মনে হয়েছে সেটাই পোস্টে লিখেছি। অস্বীকার করার উপায় নেই, মিঠুনদা আর বুম্বাদা আজীবন আদ্যপান্ত বাঙালি। শুধুই ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে ভাবেন না। সাধারণ মানুষ থেকে ইন্ডাস্ট্রি--- সবার বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বাংলায় বদল আনতে এই মানসিকতা, ব্যক্তিত্বদেরই চাইছে দল। এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে তাঁরাও হয়ত আগ্রহী গেরুয়া শিবিরের দিকে। কারণ, গেরুয়া শিবির যা যা বলেছে তাই-ই করে দেখাচ্ছে। তাই হয়ত এই যোগাযোগ। যদিও তাঁদের মধ্যে ঠিক কী কথা হয়েছে সেটা একমাত্র বলতে পারবেন মিঠুনদা বা বুম্বাদা। আমার অনুমান, এর আগে এঁরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস নিয়ে আলোচনায় বসেননি।

বিজেপি আগ্রহী এঁদের মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে হাত মেলানোয়?
রুদ্রনীল- নাকি এঁরাও আগ্রহী? আমি বলতে চাইছি, এমনটাও হতে পারে যাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁরাও সমান আগ্রহী। অর্থাৎ, একে অপরকে পছন্দ না করলে কেউ তো কারওর বাড়িতে আমন্ত্রণ করেন না, তাই না?

অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, তিনি ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তখনই নিজের লেখা বই উপহার দেন...
রুদ্রনীল- ব্যাস, তাহলে সেটাই। বাকিটা জানাবেন বুম্বাদা।

হঠাৎ কেন টলিউড এ ভাবে বিজেপিমুখী? নীল বাড়ি দখলে তারকা সংযোগ দলের প্রধান হাতিয়ার?
রুদ্রনীল- হঠাৎ নয়। সবাই সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন। বলতে দ্বিধা নেই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে টলিউডকে দু’হাতে সাজিয়েছিলেন। কিন্তু যাঁদের হাতে পরে টলিউড পরিচালনার দায়িত্ব ছেড়েছিলেন তাঁরা শুধুই রাজনীতি করেছেন, স্বজনপোষণ করেছেন, কারওর মতামতের ধার ধারেননি। বহু তারকা মুখ খুলে হুমকি শুনেছেন। আমাকেও শুনতে হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে নবান্নে বহুবার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কোনও পদক্ষেপ করেননি। এটা দুর্ভাগ্যজনক। সেই যন্ত্রণা, ভয়, আতঙ্ক থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে তারকারা পদ্ম শিবিরে যোগ দিচ্ছেন।

আপনাকেও হুমকি শুনতে হয়েছে?
রুদ্রনীল- কিছুদিন আগেই বন্ধু, সহকর্মী সোহম চক্রবর্তী খোলাখুলি বলেছেন, আমাকে বয়কট করা উচিত টালিগঞ্জ থেকে। যদিও আমার কোনও রাগ নেই সোহমের প্রতি। কারণ, একথা ‘বন্ধু’ সোহম বলেননি। বলেছেন, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব’ সোহম। রাজনীতি করতে গেলে বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে হয়।

একই ভাবে সায়নী কিন্তু আপনার মতোই মইদুলের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন...
রুদ্রনীল- ব্যক্তি সায়নীর সঙ্গে আমার কোনও বিরোধ নেই। এর আগেও অনীক দত্তের ‘ভবিষ্যতের ভূত’ নিয়ে যখন শাসকদল রাজনীতি করেছিল সায়নী তার বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সায়নীই কেন শিবলিঙ্গের উপরে কন্ডোম পরানোর ছবি শেয়ার করলেন হঠাৎ, বুঝলাম না। আমার এই বিষয়ে আপত্তি। সায়নী যথেষ্ট বুদ্ধিমান। তিনিও বুঝেছেন। আর মদন মিত্রকে নিয়ে তাঁর মন্তব্যে আমি মজা পেয়েছি। আমাদের মধ্যে কোথাও, কোনও বিরোধ নেই। তবে শাসকদলের হয়ে তাঁর মুখ খোলা আমাকে অবাক করেছে। যদিও সবটাই বদলে যাবে একুশের নির্বাচনের পর।

একুশের নির্বাচনের ফলাফলে বদল না ঘটলে, আপনিও ভবিষ্যতে আবার বদলের কথা ভাববেন?

রুদ্রনীল- কখনওই না। আমি একটা সময় পর্যন্ত বাম রাজনীতি করেছি। সেখানে কিন্তু আর ফিরে যাইনি। শাসকদল আমায় সম্মান জানিয়ে পদ দিয়েছিলেন। একটা সময়ের পর থেকে আমি সেখানেও নেই। আমার বিরুদ্ধে যদিও কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তবে সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টরা ইদানিং কিছু খুঁত খুঁজে পাচ্ছেন। বিজেপিতে যোগ দিয়েছি মতে মিলেছে বলে। কাজ করতে এই শিবিরে এসেছি। যতদিন পারব কাজ করে যাব। বদলের প্রশ্ন উঠছে কেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement