Pulse Polio Vaccination

পোলিয়োয় অনীহা, বোঝাতে ডাক ইমামদের

দামোদরপুরের যে সব অংশে টিকাকরণ পিছিয়ে সেই সব এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার ব্লক কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন বিডিও।

Advertisement
নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:০৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

Advertisement

গত রবিবার থেকে রাজ্য জুড়ে চলছে পালস পোলিয়ো টিকাকরণ কর্মসূচি। আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেটি চলার কথা। উলুবেড়িয়া-১ ব্লকে এই পর্যায়ে টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ২৮ হাজার। তার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত টিকাকরণ হয়েছে ৯৬.৩২ শতাংশ শিশুর। তবে এই ব্লকেই বহিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের দামোদরপুর গ্রাম কপালে ভাঁজ ফেলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের। কারণ, সেখানকার এক তৃতীয়াংশ শিশুকে পোলিয়ো খাওয়ানো যাচ্ছে না বলে তাঁদের দাবি।

দামোদরপুরের যে সব অংশে টিকাকরণ পিছিয়ে সেই সব এলাকা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। পরিস্থিতি সামাল দিতে বুধবার ব্লক কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন বিডিও। সেখানে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং ব্লক প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর এবং পঞ্চায়েতের কর্তারা যেমন ছিলেন তেমনই ডাকা হয়েছিল প্রায় ৩০ জন ইমামকে।মূলত ইমামদের সামনে রেখে ওই গ্রামে টিকাকরণ সফল করার জন্য বিশেষ প্রচারাভিযান চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বৈঠকে হাজির ছিলেন হাওড়া জেলা ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখ মহম্মদ আয়ুব। তিনি বলেন, ‘‘পোলিয়ো খেলে শিশুদের স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি হয় না। ভুল ধারণার বশে অনেক অভিভাবক শিশুদের পোলিয়ো খাওয়াতে ভয় পাচ্ছেন। এই ভুল ধারণা দূর করতে আমরা প্রশাসনের সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের রাস্তায় নামব।’’

ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, দামোদরপুরে লক্ষ্যমাত্রা হল ২ হাজার ১৭৯। কিন্তু বুধবার পর্যন্ত এক তৃতীয়াংশ শিশুর টিকাকরণ করা যায়নি। গ্রামের বিশেষ কিছু এলাকায় অভিভাবকেরা স্বাস্থ্যকর্মীদের নানা প্রশ্ন করছেন যার অধিকাংশই ভিত্তিহীন বলে স্বাস্থ্য-কর্তাদের দাবি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অর্পিতা রায় বলেন, ‘‘কিছু অভিভাবক বলছেন, তাঁদের বাড়ির শিশু অসুস্থ। তাই তাদের টিকাকরণ করানো যাবে না। আমরা তখন তাদের বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠাই। তাঁরা পরিদর্শন করে এসে জানান, শিশুরা সুস্থই আছে। আসলে টিকাকরণ না করানোর জন্য অভিভাভকরা অসুস্থতার অজুহাত দিয়েছিলেন।’’ এমনকি, টিকাকরণ করাতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

তবে এই এলাকায় পোলিয়ো নিয়ে অনীহা নতুন নয়। আগেও টিকাকরণ করাতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা এবং নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল। গত মে মাসে এই বছরের প্রথম পর্যায়ের টিকাকরণ কর্মসূচিতে প্রায় ১৪০০ শিশুকে টিকাকরণ করানোই যায়নি। তার মধ্যে সিংহভাগ ছিল দামোদরপুর এবং পাশের দোড়ল গ্রামের।

তবে বিডিও রিয়াজুল হক বলেন, ‘‘আমরা এই পর্যায়ে আটঘাট নিয়ে নেমেছি। প্রথম দিন টিকাকরণ কম দেখে আমি পরের দিন নিজে ওই গ্রামে যাই। কয়েক জন শিশুকে টিকাকরণ করি। নিয়মিত প্রচার চালানো হচ্ছে। একশো শতাংশ টিকাকরণ করাতে আমরা বদ্ধ পরিকর।’’

আরও পড়ুন
Advertisement