(বাঁ দিকে) মনোরঞ্জন ব্যাপারী। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বয়স বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ক্রমশ ‘বেবি’ হয়ে যাচ্ছেন হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এমন মন্তব্য করলেন হুগলির তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ হেন ‘বেবি’কে নিজের দফতরে ডেকে চা-ও পান করালেন তিনি। তার পরে বিধায়ক হিসাবে তাঁর কাজের খতিয়ানও চাইলেন। কাজের প্রতিশ্রুতিও আদায় করে নিলেন। মনোরঞ্জন জানিয়েছেন, নেতৃত্বের তরফে তাঁকে ডাকা হয়নি বলে কেন্দ্রীয় দলের ভাঙন পরিদর্শনে উপস্থিত হননি। নিজের কাজের খতিয়ান দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময়ও চেয়ে নিয়েছেন বলাগড়ের বিধায়ক।
বৃহস্পতিবার বলাগড়ে গঙ্গার ভাঙন পরিদর্শনে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। সেখানে সাংসদ রচনা থাকলেও দেখা যায়নি বিধায়ক মনোরঞ্জনকে। কেন্দ্রীয় দল চলে যেতেই চুঁচুড়ার সুগন্ধায় নিজের দফতরে বলাগড়ের বিধায়ককে ডেকে পাঠান সাংসদ। রচনা বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম তিনি (মনোরঞ্জন) থাকবেন। কিন্তু ছিলেন না। আমি ডেকে পাঠালাম। তিনি এসে বললেন, আমন্ত্রণ করা হয়নি। আপনাকে কেউ আমন্ত্রণ করবে না। এটা দলীয় কাজ। কেউ না বললেও চলে এলে আমরা খুশি হতাম।’’ তার পরেই হুগলির সাংসদ বলেন, ‘‘ওঁর বয়স হয়ে গিয়েছে। বেবি হয়ে গিয়েছেন। তাই বেবিসুলভ আচরণ করছেন। একটু ফোন করে তাকে বললাম আপনি আসুন। উনি এলেন, খুশি হলেন, একটু চা খাওয়ালাম।’’ কেন তিনি এই পদক্ষেপ করেছেন, তা-ও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি যাতে মনঃক্ষুণ্ণ না হন, বলাগড়ে ভাল করে কাজ যাতে করতে পারি, একসঙ্গে যাতে পথ চলতে পারি, তাই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছি।’’
মনোরঞ্জনের কাছ থেকে তাঁর কাজের খতিয়ানও চেয়েছেন রচনা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বলেছি, আপনি কী কাজ করলেন, যদি আমায় জানান, ভাল হয়। যাতে আমি আগামী দিনে মানুষকে বলতে পারি, আপনি বিধায়ক হয়ে কী কাজ করেছেন।’’
সাংসদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে মনোরঞ্জন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যে ভাঙন দেখতে আসবে, এ নিয়ে নেতৃত্বের তরফে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় দল এসেছে, পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। দলীয় নেতৃত্ব জানাননি। লোকসভা ভোটের সময় দিদি বলেছেন নিশ্চুপ থাকতে। তখন থেকে নিশ্চুপ আছি। দলের কর্মসূচিতে কেউ ডাকে না। ডাকলে যাব।’’ সাংসদকে কাজের খতিয়ানও তিনি দেবেন বলে জানিয়েছেন, কারণ, তাঁর খতিয়ান চাওয়ার অধিকার রয়েছে। বলাগড়ের বিধায়কের কথায়, ‘‘সাংসদ খতিয়ান চেয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা সময় চেয়েছি। আমি খতিয়ান পৌঁছে দেব। আমার মানও নেই। অভিমানও নেই। সম্মানও নেই। যত টাকা পেয়েছি, কাজ করেছি। সাড়ে চার লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। মার্চে আবার ফান্ড ঢুকবে।’’