হরিপালের স্কুলে খাদ্যমেলা। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি প্রস্তাব মতো স্কুলে স্কুলে খাদ্যমেলা চলছে। পড়ুয়ারা নিজেরাই নানা রকম পদ তৈরি করে স্কুল প্রাঙ্গণেই বিক্রি করছে। হুগলির হরিপালের দ্বারহাট্টা রাজেশ্বরী ইনস্টিটিউশনেও বুধবার তেমনই মেলা বসেছিল। কিন্তু এখানকার পড়ুয়ারা শুধু নিজেদের তৈরি করা খাবার বিক্রিই করল না, এক ধাপ এগিয়ে অর্জিত অর্থ পাঠিয়ে দিল নদিয়ার রানাঘাটে কঠিন রোগে আক্রান্ত অস্মিকা দাসের চিকিৎসার জন্য।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকের বক্তব্য, পড়াশোনার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের মধ্যে সামাজিক ভাবনার প্রকাশ জরুরি। এই ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সেটা সম্ভব। প্রধান শিক্ষক গোপালচন্দ্র ঘোষের কথায়, ‘‘হতে পারে অল্প কিছু টাকা! কিন্তু সেটাই যে ছাত্রছাত্রীরা পাঠিয়েছে, খুব ভাল লাগছে। ওদের মানবিক সচেতনতায় আমি মুগ্ধ। আরও কিছু টাকা পাঠানো হবে।’’
কী না বানিয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা! পাটিসাপটা, আনন্দ নাড়ু, কদম পিঠে, মথুরা কেক, ফলের রস, লস্যি তো ছিলই, সঙ্গে সাবেক আলুকাবলি, ঝালমুড়ি, ঘুগনি থেকে পাস্তা, পনির পসিন্দা আরও কত কী! চেটেপুটে খেলেন সবাই।
মেলার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘আহারে বাহারে খাই খাই উৎসব’। উদ্বোধন করেন প্রধান শিক্ষক। তিনি জানান, স্টল ছিল ৫০টি। বিক্রেতা মোট ১৬২ জন পঞ্চম থেকে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। তারা বাড়ি থেকে খাবার বানিয়ে এনেছিল। কিছু খাবার মেলায় বসেও তৈরি করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবক, আশপাশের মানুষজন, শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই শীতের রোদ পিঠে নিয়ে পছন্দের খাবার কিনে রসনা তৃপ্ত করলেন। খাবার ফুরিয়ে গেল কিছুক্ষণের মধ্যেই। খাবার চাখতে এসে না পেয়ে শুকনো মুখেও ফিরলেন অনেকে।
মেলায় উপস্থিত ছিলেন স্কুলের সভাপতি শ্যামাশঙ্কর সিংহরায়-সহ পরিচালন সমিতির অন্য সদস্যরা। প্রধান শিক্ষকের দাবি, মেলা ঘিরে স্থানীয় মানুষের উৎসাহও ছিল চোখে পড়ার মতো। আয়োজনে সব শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরাই সহযোগিতা করেছেন। বিশেষত শিক্ষক ভানুপ্রকাশ দে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে উঠেপড়ে লেগেছিলেন।
সব মিলিয়ে সিলেবাসের বাইরে এক অন্য রকম দিন কাটাল হরিপালের এই বিদ্যালয়।