জেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে আরএসপি
Hooghly

আলুতে সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবি হুগলিতে

খানাকুল ১ ব্লকের রামমোহন ২ পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুরের অরুণ কাঁড়ার আলু চাষ করেছিলেন ৭ বিঘে জমিতে।

Advertisement
প্রকাশ পাল , পীযূষ নন্দী
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫ ০৯:৪৭
হিমঘরের পথে আলু। পান্ডুয়ায়।

হিমঘরের পথে আলু। পান্ডুয়ায়। ছবি: সুশান্ত সরকার।

হিমঘরে আলু রাখা চলছে। অভাবী বিক্রি ঠেকাতে কুইন্টালপ্রতি ৯০০ টাকা সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই দাম পর্যাপ্ত নয় বলে চাষিদের একটি বড় অংশের দাবি। এই দাবিতে গত বুধবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে হুগলি জেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে আরএসপি।

Advertisement

খানাকুল ১ ব্লকের রামমোহন ২ পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুরের অরুণ কাঁড়ার আলু চাষ করেছিলেন ৭ বিঘে জমিতে। বিঘাপিছু গড়ে ৭০ বস্তা ফলন পেয়েছেন। তিনি জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীকে ৩৮০-৩৯০ টাকা বস্তা (৫০ কেজি) দরে আলু বেচেছেন। এতে তাঁর লাভ হয়নি। বরং কয়েক হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। সহায়ক মূল্যে বেচলে আরও লোকসান হত।

কেন?

ওই আলুচাষির ব্যাখ্যা, বাছাই, বস্তায় ভরা থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার খরচ বাদ দিলে আলুর দর বস্তাপিছু ৪০০ টাকাও হবে না। আবার ছোট আলু দেওয়া যাবে না। ফলে, লাভের প্রশ্নই নেই। তাঁর কথায়, ‘‘'যাঁদের নিজস্ব জমি নেই, সহায়ক মূল্যে বেচলে, তাঁদের লোকসান বেশি।’’ জেলার বিভিন্ন ব্লকের অনেক চাষিরই একই দাবি। চণ্ডীতলা ১ ব্লকের কৃষ্ণরামপুরের সুশান্ত দাস, পুরশুড়ার দেবেন ধাড়ারও দাবি, সহায়ক মূল্যে অবধারিত লোকসান।

জেলা আরএসপি সম্পাদক মৃন্ময় সেনগুপ্ত জানান, হুগলির বিভিন্ন ব্লকে খেতে গিয়ে ক্ষেত্র সমীক্ষা করা হয়েছে দলের তরফে। দেখা গিয়েছে, কুইন্টালপ্রতি জ্যোতি আলু চাষে খরচ ৮০০-৮৫০ টাকা। ভাগ, চুক্তি বা ইজারায় চাষের ক্ষেত্রে আরও ৩০০-৪০০ টাকা বেশি। সেই আলু ৯০০ টাকা কুইন্টাল দরে সরকারকে বিক্রি করে চাষির কোনও লাভ হচ্ছে না। মৃন্ময়ের ক্ষোভ, ‘‘এমন সহায়ক মূল্য কৃষকের পেটে লাথি মারার শামিল।’’

কৃষি বিপণন দফতর অবশ্য এমন অভিযোগ মানেনি। তাদের বক্তব্য, এই সহায়ক মূল্যে চাষির ক্ষতি নয়, লাভই হচ্ছে। কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার কটাক্ষ, আরএসপির কথায় মানুষ আমল দেবেন না।

আরএসপি নেতৃত্বের অভিযোগ, বীজ, সারে কালোবাজারি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগে যেমন খুশি দাম নেওয়া হয়েছে। চাষিকে যথারীতি চড়া সুদে কৃষি-ঋণ নিতে হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে নানা জায়গায় চাষের ক্ষতিও হয়। এর কোনওটাই সরকারের অজানা নয়। অথচ, সহায়ক মূল্য নির্ধারণের সময় এই সব বিষয় বিবেচনার মধ্যে রাখাই হয়নি। হলে দামের এই বহর হত না। এই পরিস্থিতিতে খোলা বাজারে দাম ওঠানামা করায় চাষির কখনও লাভ হচ্ছে, কখনও হচ্ছে না।

Advertisement
আরও পড়ুন