খোঁজ চলছে বেআইনি সংযোগের। গোঘাটের রঘুবাটী পঞ্চায়েত এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।
‘জলজীবন মিশন’ প্রকল্পে হুগলি জেলায় বাড়ি বাড়ি লাইন সংযোগের কাজ ৬৫ শতাংশর বেশি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বহু জায়গাতেই অভিযোগ উঠেছে, কাজ হওয়ার পরেও জল পৌঁছচ্ছে না। কাজটা যারা করছে, সেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় দফতরের পাইপ লাইন কেটে বেআইনি সংযোগ নেওয়ার জন্যই এই হাল।
রাজ্য জুড়ে এই অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা থেকে বৈঠকে সমস্ত জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন, বেআইনি সংযোগ নিলে সংশ্লিষ্টকে গ্রেফতার করতে পারবেন তাঁরা। আর তারপরই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর হুগলিতে বেআইনি সংযোগ চিহ্নিত করে তা কাটার কাজ জোরকদমে শুরু করল।
হুগলি জেলার ক্ষেত্রে কাজটি অবশ্য আগে থেকেই বিক্ষিপ্ত ভাবে চলছিল। তবে অধিকাংশ জায়গায় স্থানীয় মানুষের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছিল। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর সেই কাজে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। গত দু’দিনেই প্রায় ৪৩৫টি বেআইনি সংযোগ চিহ্নিত করে প্রায় ২৫০টির বেশি কাটা হয়েছে বলে জানান দফতরের জেলা এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দফতরের অনুমতি ছাড়া পাইপ কেটে অবৈধ সংযোগ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বেআইনি ভাবে পাইপ লাইন সংযোগ আটকাতে জনসচেতনারও আয়োজন করা হচ্ছে।”
জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন মৌজায় মোট ৯ লক্ষ ৫৯ হাজর পরিবারে জল দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষ ২৫ হাজার বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছনো হয়েছে। পরিবারের মাথা পিছু ৫৫ লিটার জল দেওয়ার বিধি। কিন্তু বেশ কিছু পরিবারে ৪ জন সদস্য থাকলে যেখানে ২২০ লিটার জল পাবে, সেখানে বেআইনি পাইপ জুড়ে হাজার লিটারের ট্যাঙ্কে দু’বেলা জল ভরা চলছে। খালি পানীয় ও রান্নার জন্য ব্যবহারে দেওয়া ওই জল থেকে গরুর গা ধোয়ানো, বাগানে সেচ দেওয়ার কাজও চালানো হয়। আরামবাগ মহকুমায় এইরকম খানাকুলের রাজহাটি ২ পঞ্চায়েত এলাকার অনেক গ্রাম-সহ আরামবাগের ডিহিবয়রা, দক্ষিণ রসুলপুর, গোঘাটের বালি ইত্যাদি বহু গ্রামে এদিন পর্যন্ত ১৫০টি বেআইনি সংযোগ চিহ্নিত করে ১২০টি কাটা হয়েছে।