Hooghly BJP

পুলিশকে জুতো ছুড়ে মার! ভোরবেলা বাড়িতে গিয়ে বিজেপি নেত্রীকে গ্রেফতার করল চুঁচুড়া থানার পুলিশ

গত ২ সেপ্টেম্বর জেলায় জেলায় জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। সেই অভিযানে পুলিশের বাধা পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে বিজেপি নেত্রী পম্পা অধিকারী জুতো ছোড়েন বলে অভিযোগ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৩
হুগলির ধৃত বিজেপি নেত্রী পম্পা অধিকারী।

হুগলির ধৃত বিজেপি নেত্রী পম্পা অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও অভিযানের দিন পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী পম্পা অধিকারীকে গ্রেফতার করা হল বুধবার। অভিযোগ, ভোরবেলা চুঁচুড়া মহিলা থানার পুলিশ তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছে। এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হুগলি বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

গত ২ সেপ্টেম্বর জেলায় জেলায় জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। হুগলিতে জেলাশাসকের দফতর ঘেরাও করতে হুগলি এবং শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতৃত্ব যৌথ ভাবে পথে নেমেছিলেন। দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে ঘড়ির মোড় পর্যন্ত পৌঁছন। সেখানেই পুলিশ তাঁদের আটকে দেয় বলে অভিযোগ। এর পর পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের। ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকানো হয়েছিল। অভিযোগ, ওই বিক্ষোভের সময়েই পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে জুতো ছুড়ে মারেন পম্পা। তিনি বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক।

হুগলির বিক্ষোভের সময় পম্পার জুতো ছুড়ে মারার ভিডিয়ো সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। তিনি নিজেও ওই কাজের কথা অস্বীকার করেননি। বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়ে পম্পা প্রথমে নিজের পা থেকে জুতো খুলে নেন। তার পর জুতো উঁচিয়ে পুলিশকে দেখাতে থাকেন। পরে ওই জুতো তিনি পুলিশের দিকে ছুড়ে মারেন। এ প্রসঙ্গে পম্পা বলেছিলেন, ‘‘আমাদের মহিলা কর্মীদের গালিগালাজ করছিল পুলিশ। তাঁদের ফেলে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়েছে। আমি একজন মহিলা হয়ে এই দৃশ্য দেখতে পারিনি। ওদের মুখে জুতো মারা উচিত ছিল। তা না করে আমি জুতোটা ছুড়ে মেরেছি। সামনে থাকলে পুলিশ অফিসারের মুখে ওই জুতো মারতাম আমি।’’

পম্পার স্বামী বলাই অধিকারী বুধবার জানিয়েছেন, ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ তাঁদের বাড়িতে পুলিশের একটি বাহিনী পৌঁছয়। তাতে অনেক মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন। বিজেপি নেত্রীকে ঘুম থেকে তুলে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়।

পম্পার গ্রেফতারির খবর পেয়ে চুঁচুড়া মহিলা থানায় গিয়েছিলেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি তুষার মজুমদার বলেন, ‘‘সে দিন অনেকেই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। তা হলে পম্পাকে কেন গ্রেফতার করা হল? শান্তিপূর্ণ ভাবেই আমাদের প্রতিবাদ চলছিল। অন্যায় ভাবে পম্পাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা আইনি লড়াই লড়ব।’’

পুলিশ সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের কাজে বাধাদান, বেআইনি জমায়েত, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় পম্পার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বুধবারই তাঁকে চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়।

হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা বিচার চেয়ে আন্দোলন করছেন। বিজেপি সাধারণ মানুষের সেই আবেগ নিয়ে খেলা করছে। ওরা বুঝে গিয়েছে, বাংলায় ওদের কিছু নেই। তাই এই আন্দোলনটাকে ক্যাশ করতে চাইছে। নোংরা রাজনীতি করছে। আমরা রাজনীতি চাই না, আমরা চাই দোষীর শাস্তি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement